ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মালবাহী ট্রেনের বগি লাইনচ্যুত, ট্রেন চলাচলে বিঘ্ন
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মালবাহী কনটেইনার ট্রেনের একটি বগির চারটি চাকা লাইনচ্যুত হয়ে ঢাকামুখী আপলাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে চট্টগ্রামমুখী লাইন (ডাউন) দিয়ে ট্রেন চলাচল করছে। আজ রোববার সকাল পৌনে ৯টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের লেভেল ক্রসিং এলাকার পূর্ব দিকের আউটারে কলেজপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
বগি লাইনচ্যুতির কারণে প্রায় আধা কিলোমিটার এলাকার রেললাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মেরামত না হওয়া পর্যন্ত ভৈরব থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পাঘাচং রেলস্টেশন পর্যন্ত ডাউনলাইন দিয়েই ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট রেলপথের সব ট্রেন চলাচল করবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
স্থানীয় লোকজন ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী মালবাহী একটি কনটেইনার ট্রেন আজ সকাল সোয়া আটটার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার পাঘাচং রেলস্টেশন অতিক্রম করে। সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের লেভেল ক্রসিং এলাকার পূর্ব দিকের আউটারে কলেজপাড়া এলাকায় পৌঁছালে ৩১ নম্বর বগির পেছনের চারটি চাকা লাইনচ্যুত হয়। সংবাদ পেয়ে রেলওয়ে পুলিশ, স্টেশনমাস্টার ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সেলিম শেখ ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন।
সরেজমিনে শহরের লেভেল ক্রসিং এলাকার পূর্ব দিকের আউটারে কলেজপাড়া এলাকায় দেখা যায়, চাকা লাইনচ্যুত হওয়ার পরও ট্রেন চালিয়ে যাওয়ায় রেললাইনের অনেক স্লিপার ভেঙে গেছে। ফিশপ্লেট ও স্লিপারের ক্লিপ উঠে গেছে। রেলের দুটি লাইন ট্র্যাক থেকে সরে বেঁকে গেছে। রেলওয়ের কর্মীরা ফিশপ্লেট ও স্লিপার ক্লিপ কুড়িয়ে লেভেল ক্রসিংয়ের পাশের কক্ষে নিয়ে জড়ো করছেন। ৩০০ থেকে ৩৫০টি স্লিপার ক্লিপ সরে গেছে। সকাল সাড়ে ১০টার পর উদ্ধারকাজ শুরু হয়।
মালবাহী কনটেইনার ট্রেনের লোকোমোটিভ মাস্টার (চালক) মোহাম্মদ নুরুন নবী প্রথম আলোকে বলেন, ৩০ কিলোমিটার গতিতে মালবাহী ট্রেন চলছিল। ৩১ নম্বর বগি লাইনচ্যুত হয়। রেলস্টেশন এলাকার ভেতরে ঢোকার পর পেছনে ধোঁয়া দেখতে পান। পরে ট্রেন থামিয়ে গার্ডব্রেকে থাকা পরিচালককে বিষয়টি দেখতে বলেন। ৩১ নম্বর বগির পেছনের চারটি চাকা লাইনচ্যুত হয়েছে বলে জানান তিনি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশন মাস্টার জসিম প্রথম আলোকে বলেন, মালবাহী ট্রেনের চারটি বগি লাইনচ্যুত হওয়ায় আপলাইন দিয়ে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। আখাউড়া রেলওয়ে জংশন থেকে উদ্ধারকারী ট্রেন আসার জন্য খবর দেওয়া হয়েছে। রেললাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এখন ডাউনলাইন দিয়ে সব ট্রেন চলাচল করবে।
ট্রেন দুর্ঘটনার কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন ট্রেনের যাত্রীরা। শরিফুল হক নামের ঢাকাগামী এক যাত্রী বলেন, উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনে ঢাকায় যেতে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনে আসেন। সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ট্রেন আসেনি। ট্রেন পাঘাচং রেলস্টেশনে অপেক্ষা করছে বলে জানতে পেরেছেন।
আখাউড়া রেলওয়ে জংশন রেলস্টেশনের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী (রেলওয়ে) মেহেদী হাসান আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ৬০টি স্লিপার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখানে নতুন স্লিপার লাগানো হবে। উদ্ধারকাজ শেষ হতে তিন থেকে চার ঘণ্টা সময় লাগবে।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সেলিম শেখ প্রথম আলোকে বলেন, আপাতত ডাউনলাইন দিয়ে ট্রেন চলাচল করবে। উদ্ধারকারী দল এসে কাজ শুরু করেছে। পাঘাচং ও তালশহর রেলস্টেশনে ট্রেন দাঁড় করিয়ে চালানো হবে।