Home সারাদেশ জবি মাইক্রো বাস দুর্ঘটনার শিকার, বিনা অনুমতিতে ব্যবহারের অভিযোগ
অক্টোবর ২৮, ২০২৩

জবি মাইক্রো বাস দুর্ঘটনার শিকার, বিনা অনুমতিতে ব্যবহারের অভিযোগ

তৌকির আহমেদ, জবি প্রতিনিধি: 
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া অংশের মেঘনা সেতু থেকে নামার সময় দুর্ঘটনা কবলিত হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় জবি মাইক্রোবাস৷ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ডীন এবং ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. গোলাম মোস্তফার বিরুদ্ধে উপাচার্যের অনুমতি ছাড়াই বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের একটি মাইক্রোবাস ঢাকার বাইরে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
পরবর্তীতে দুর্ঘটনা কবলিত মাইক্রোবাস নিয়েই পারিবারিক একটি দাওয়াতে যোগদান শেষে আবার ঢাকায় ফিরে আসেন অধ্যাপক ড. গোলাম মোস্তফা।
জানা যায়, ২০১৬ সালের ২২ নভেম্বর বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের সৌজন্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের পক্ষ থেকে উপহার হিসেবে দু’টি বাস ও দু’টি মাইক্রোবাস দেওয়া হয়। তার মধ্যে একটি মাইক্রোবাস (ঢাকা মেট্রো-চ ৫৬-১৬১২) তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ডীনের জন্য একটি মাইক্রোবাস বরাদ্দ দেন৷ এরপর থেকেই বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের দাপ্তরিক কার্যক্রমের জন্য মাইক্রোবাসটি ব্যবহৃত হচ্ছে৷ ড্রাইভারের বেতন বাদে মাইক্রোবাসটির খরচ বহন করে আসছে বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ।
তবে শর্ত রয়েছে এই মাইক্রোবাসটি ঢাকার বাইরে নিয়ে যেতে হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের অনুমতি নিয়ে যেতে হবে এবং ব্যক্তিগত প্রয়োজনে ব্যবহার করলে তেল খরচ ব্যক্তিগতভাবে বহন করতে হবে।
কিন্তু গত ২০ অক্টোবর (শুক্রবার) নিজের স্ত্রীকে সাথে নিয়ে বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ওই মাইক্রোবাসটি দিয়েই মেঘনা ব্রিজ থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরত্বে একটি দাওয়াতে যোগদান করেন অধ্যাপক ড. মো. গোলাম মোস্তফা৷ ব্রিজ থেকে নামার সময় একটি বাইসাইকেল রাস্তা ক্রস করতে গিয়ে মাইক্রোবাসটির সামনে উঠে যায়৷ যার ফলে মাইক্রোবাসটির সামনের অংশটি বেকে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ঢাকার বাইরে মাইক্রোবাসটি নিয়ে গেলেও এ বিষয়ে কিছুই জানতেন না বলে দাবি বিশ্ববিদ্যালয়ের রুটিন দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদের৷ তিনি বলেন, আমি দুর্ঘটনার পরে বিষয়টি জেনেছি। কিভাবে এমন হয়েছে, গাড়ির কি অবস্থা এসব বিষয়ে একটি রিপোর্ট রেজিস্ট্রার দপ্তরে জমা দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছি পরিবহন প্রশাসককে৷
দুর্ঘটনা কবলিত মাইক্রোবাসটি নিয়ে শুক্রবার রাতেই ঢাকায় ফিরেন অধ্যাপক ড. গোলাম মোস্তফা। তবে প্রায় এক সপ্তাহ কেটে গেলেও মাইক্রোবাসটির রিপেয়ার করা হয়নি৷
এঘটনায় বিরূপ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা৷ বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের জন্য বরাদ্দ হলেও নিয়মানুযায়ী উপাচার্যের অনুমতি ছাড়াই ঢাকার বাইরে মাইক্রোবাসটি পারিবারিক কাজে নিয়ে যাওয়া এবং দুর্ঘটনা কবলিত হবার পরও রিপেয়ার না করাটা এক প্রকার অবহেলা বলে দাবি তাদের।
 মাইক্রোবাসটির চালক জুয়েল রানা আমাদের সময়.কমকে বলেন, শুক্রবার বিকেলে রওনা দেই ঢাকা থেকে। মেঘনা ব্রিজ থেকে নামার সময় বাই সাইকেল হঠাৎ করে সামনে উঠে যায়৷ সেই বাই সাইকেল চালকই সবার সামনে বলেছে আমার কোন দোষ ছিলনা৷ স্যার ও স্যারের স্ত্রী গাড়িতে ছিলেন৷
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল বলেন, আমাকে এক ছাত্র ফোন দিয়ে জানিয়েছিল যে মেঘনা ব্রিজ থেকে নামার সময় আমাদের একটি মাইক্রোবাস দুর্ঘটনা কবলিত হয়। পরের দিন জানতে পারি বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ডীন গাড়িটি নিয়ে একটি দাওয়াতে গিয়েছিলেন।
 তবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. গোলাম মোস্তফা বলেন আমি এখন কাজে ব্যস্ত আছি৷ পরে কথা বলব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন প্রশাসক অধ্যাপক ড. সিদ্ধার্থ ভৌমিক বলেন, ওই মাইক্রোবাসটি বিজনেস ফ্যাকাল্টির। কেবল ড্রাইভার পরিবহন পুলের৷ তবে মাইক্রোবাসটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদ। ইতিমধ্যেই বিস্তারিত ট্রেজারার স্যারকে জানিয়েছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *