Home সারাদেশ হামুনের আঘাতে কক্সবাজারে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি
অক্টোবর ২৬, ২০২৩

হামুনের আঘাতে কক্সবাজারে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় হামুনের আঘাতে কক্সবাজারে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। উড়ে গেছে গাছপালা ও ঘরবাড়ি। কক্সবাজার শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে একটি বাড়ির দেয়ালচাপায় একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন পৌর মেয়র মাহবুবুর রহমান। এ ছাড়া দেয়ালচাপা ও গাছপালা পড়ে আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।

সন্ধ্যা ৭টার পর থেকে ঘূর্ণিঝড় হামুন কক্সবাজার উপকূল আঘাত হানা শুরু করে। এরপর একটানা রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত কক্সবাজার উপকূল এবং আশপাশের অঞ্চল দিয়ে ব্যাপক ঝড়ো হাওয়া বয়ে যায়। একই সঙ্গে শুরু হয় বজ্রবৃষ্টি।

ঝড়ো হাওয়া আর বাতাসের তীব্র আঘাতে কক্সবাজার শহর ও উপকূলীয় এলাকায় গাছপালা উপড়ে পড়ে এবং কাঁচা ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়। কক্সবাজার শহরের প্রধান সড়ক, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরসহ অনেক এলাকায় ঝড়ের আঘাতে গাছ উপড়ে পড়ে। এতে সড়কে যানবাহন চলাচল ব্যাহত হয়। সন্ধ্যার পর থেকে কক্সবাজার শহর ও আশেপাশের এলাকা বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন রয়েছে।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় হামুনে সৃষ্ট ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টিতে জেলায় কাঁচা ঘরবাড়ি এবং গাছপালার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কক্সবাজার শহরের সমিতিপাড়া, কুতুবদিয়া পাড়াসহ জেলার উপকূলীয় এলাকায় ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।’ আগামীকাল হামুনের আঘাতে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তার বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া সম্ভব বলে জানিয়েছেন তিনি।

কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ ইমাম উদ্দিন জানিয়েছেন ঘূর্ণিঝড় হামুন মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার পর থেকে কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করে। সাগরে গতিপথ পরিবর্তন করে এটি কক্সবাজার এবং চট্টগ্রাম সমুদ্র উপকূলের দিকে ধাবিত হয়। পরে কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরে ৬ নম্বরের পরিবর্তে ৭ নম্বর বিপদসংকেত জারি করে আবহাওয়া অফিস। ঘূর্ণিঝড় হামুনের প্রভাবে কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলে ঝড়ো হাওয়া ও বজ্রবৃষ্টি হয়। তিনি আরও জানান, রাত ১০টার পর থেকে হামুন কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করে দুর্বল হয়ে যাবে। তবে এর প্রভাবে কক্সবাজার উপকূলে ভারি বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

এদিকে, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় কক্সবাজারে ব্যপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়। কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বিভীষণ কান্তি দাস জানিয়েছেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সৈকতে বিপদসংকেতের অংশ হিসেবে পর্যটকদের সতর্কতায় মাইকিং করা হযেছে। এ ছাড়া সৈকতে দায়িত্বরত লাইফগার্ড কর্মীরা পর্যটকদের নিরাপদে থাকতে মাইকিং করছেন। কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকার ৩০ হাজার মানুষ সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নিয়েছেন।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বঙ্গোপসাগর উত্তাল রয়েছে। উপকূলের নৌযান এবং মাছ ধরার নৌকাগুলোকে উপকূলের নিরাপদ স্থানে থাকার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সাগরে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের আয়োজনে মঙ্গলবার দুপুরে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা হয়েছে। উপকূলীয় এলাকায় লোকজনদের বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্র ও নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নিতে ইতোমধ্যে মাইকিং করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *