পূজার ভোজে ৬ পদ
উৎসব মানেই খাবার-দাবাড়ের ধুম। সাত-সতেরো খাবারের আয়োজনে মেতে উঠে বাড়ি থেকে শুরু করে পূজা মণ্ডপ পর্যন্ত। খাবারের আয়োজনে ভিন্নতা আনতে রইলো অসিত কর্মকারের ৬ পদ।
পদ্ম ইলিশ
উপকরণ
ইলিশ মাছ ৮ টুকরো , পদ্ম ফুলের পাপড়ি বাটা ১/২ কাপ , সরষে বাটা ২ টেবিল চামচ , হলুদ গুঁড়ো ১ চা চামচ , মরিচ গুঁড়ো ১ চা চামচ , টক দই ১/২ কাপ, কাজু ও পেস্তা বাদাম বাটা ২ টেবিল চামচ ,নারিকেল বাটা ২ টেবিল চামচ , আদা ও জিরা বাটা আধা চা চামচ , লবণ পরিমাণ মত, সরষের তেল ৩ টেবিল চামচ ।
প্রণালী
প্রথমে ইলিশ মাছ গুলো ভালোভাবে ধুয়ে পানি ঝড়িয়ে রাখুন। এবার সব মশলা মাখিয়ে প্যানে দিয়ে ঢিমে আঁচে রান্না করুন। মাঝে একবার মাছগুলো উল্টে দিন। মাখো মাখো হয়ে এলে সরষে তেল ছড়িয়ে চুলা বন্ধ করুন।
বেসনে মোড়ানো পোস্ত চিংড়ির কষা
ক) বেসনের রুটির জন্য – বেসন ২ কাপ, ময়দা ১/২ কাপ, আদা বাটা ১/২ চা চামচ, ধনেপাতা কুঁচি ১/২ কাপ, সরষের তেল ২ চা চামচ, ঈষৎ উষ্ণ গরম পানি প্রয়োজন মতো, লবণ সামান্য।
খ) চিংড়ি মাছের জন্য – চিংড়ি মাছ ৮ টি, লেবুর রস ২ চা চামচ, কাঁচামরিচ কুঁচি ১ চা চামচ, লবণ সামান্য।
গ) ফোঁড়নের জন্য – মেথি ১/৪ চা চামচ, জিরা ১/৪ চা চামচ, শুকনোমরিচ ২ টি, তেজপাতা ২ টি।
ঘ) কষানোর জন্য – সরষে তেল ১/২ কাপ, আদাবাটা ১ চা চামচ, জিরে বাটা ১/২ চা চামচ, ধনিয়া গুড়ো ১/২ চা চামচ, নারকেল বাটা ২ চা চামচ, হলুদ গুড়ো ১/২ চা চামচ, মরিচ গুড়ো ১ চা চামচ, বাদাম বাটা ২ চা চামচ, নারকেল দুধ ১ কাপ, পানি ১ কাপ, কাঁচামরিচ ৪ টি, গরম মশলা গুড়ো ১/২ চা চামচ, লবণ স্বাদমতো।
প্রণালী
চিংড়ি মাছের খোসা বেছে মাঝ বরাবর সামানয় কেটে রগ বের করে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে রাখুন। এবার মাছগুলোতে কাঁচামরিচ কুঁচি, সামান্য লবণ ও লেবুর রস মেখে রাখুন। অন্য একটি বাটিতে (ক) নং উপকরণ ভালোভাবে মিশিয়ে কিছুটা নরম আকারের ডো করে রুটির মতো বেলে নিন। এবার এই রুটিতে অল্প করে পোস্ত বাটা ছড়িয়ে চিংড়ি মাছ বিছিয়ে রুটি রোলের মতো করে মুড়িয়ে কলাপাতায় বিছিয়ে ১০ মিনিট ভাপিয়ে তুলে রাখুন। প্যানে সরষের তেল দিয়ে মেথি, শুকনোমরিচ, জিরা ও তেজপাতা ফোঁড়ন দিন। এবার একে একে বাটা ও গুড়ো মশলা দিয়ে ভালো করে কষাতে থাকুন। তেল ওপরে উঠে এলে নারকেল দুধ ও পানি দিন। ঝোল কিছুটা কমে ঘন হয়ে এলে আগে থেকে ভাপিয়ে রাখা বেসন চিংড়ি গুলো সাবধানে দিয়ে আলতোভাবে নেড়ে কাঁচামরিচ ও গরম মশলা গুড়ো ছড়িয়ে ঢেকে ৫ মিনিট দমে রেখে নামিয়ে পোলাও বা লুচির সঙ্গে পরিবেশন করুন ।
কাঞ্জলী মাখা
উপকরণ
কলা গাছের কাঞ্জল মাঝারি আকারের ১ টি, ছানা ১/৪ কাপ, সেদ্ধ ছোলার ডাল ৪ টেবিল চামচ, ভাজা বাদাম ২ চা চামচ, নারকেল কোড়া ১/২ কাপ, আদা বাটা ১ চা চামচ, জিরা গুড়ো ১ চা চামচ, ধনিয়া গুড়ো ১/২ চা চামচ, হলুদ গুড়ো১/২ চা চামচ, নারকেল দুধ ১ কাপ, কাঁচামরিচ আধা বাটা ৬ টি, তেজপাতা ২ টি, এলাচ ২ টি, গোটা জিরে ১/২ চা চামচ, সরষের তেল ১/২ কাপ, ঘি ২ চা চামচ, লবণ স্বাদমতো।
প্রণালী
কলার কাঞ্জল কেটে ধুয়ে গরম পানিতে দুইমিনিট ভাপিয়ে পানি ঝরিয়ে রাখুন। ঝড়ানো পানি রেখে দিন। প্যানে তেল দিয়ে তাতে কাঁচামরিচ আধা বাটা, তেজপাতা, এলাচ, গোটা জিরে ফোঁড়ন দিন। এতে বাকি বাটা ও গুড়ো মশলা দিন। কাঞ্জল স্বেদ্ধ সামান্য পানি দিয়ে মশলা কষিয়ে স্বেদ্ধ কাঞ্জল ও নারকেল কোড়া দিয়ে ভাজুন। একটি বাটিতে ১ কাপ নারকেল দুধ ও ১/২কাপ কাঞ্জল স্বেদ্ধ পানি মিশিয়ে দিয়ে স্বেদ্ধ ছোলা ও স্বাদমতো লবণ দিয়ে ঢেকে ঢিমে আঁচে রান্না করুন। কিছুটা শুকিয়ে ভেজা ভেজা অবস্থায় এলে নামিয়ে ছানা ও ঘি ছড়িয়ে গরম ভাত অথবা লুচির সাথে পরিবেশন করুন।
নারকেল নাড়ু
উপকরণ
নারকেল কোড়া ২ কাপ, আখের গুড় ৪০০ গ্রাম, ঘি ২ টেবিল চামচ, এলাচ গুড়ো ১/২ চা চামচ, পানি সামান্য ।
প্রণালী
একটি প্যানে গুড়ের সাথে অল্প পানি মিশিয়ে সাথে কোড়া নারকেল দিয়ে অনবরত নাড়তে থাকুন। নারকেল আঠালো হয়ে এলে ঘি দিয়ে আবারো নাড়তে হবে। মিশ্রণটি প্যান থেকে উঠে এলে নামিয়ে গরম অবস্থায় হাতের তালুতে নিয়ে গোল গোল নাড়ু বানিয়ে ঠান্ডা করে পরিবেশন করুন। একই ভাবে গুড়ের পরিবর্তে চিনি মিশিয়েও তৈরি করা যায়।
সাবেকী পায়েস
উপকরণ
তরল দুধ ২ লিটার, তুলশীমালা চাল ২০০ গ্রাম, ঘি ১/২ কাপ, চিনি ১/২ কাপ, দারচিনি ছোট সাইজের ১ টুকরো, এলাচ ২ টি , মাওয়া ২ চা চামচ, বাদাম বাটা ২ টেবিল চামচ, কিশমিশ বাটা ১ টেবিল চামচ, বাদাম কুঁচি ও ঘি সামান্য সাজানোর জন্য।
প্রণালী
চাল ধুয়ে পানি ছেঁকে রাখুন ।প্যানে তরল দুধ , এলাচ ও দারচিনি মিশিয়ে মৃদু আঁচে জ্বাল দিয়ে অর্ধেক করে নিন । অন্য প্যানে ঘি দিয়ে চাল হাল্কা ভেজে নিন । এবার জ্বাল দেয়া তরল দুধ ভাজা চালের মধ্যে ঢেলে নাড়তে থাকুন যাতে দানা না বেধে যায় । চাল কিছুটা স্বেদ্ধ হয়ে এলে একে একে বাকি সব উপকরণ দিয়ে নাড়তে থাকুন। সব উপকরণ ভালোভাবে মিশে বেশিরভাগ মিহি হয়ে এলে নামিয়ে ঠান্ডা করে পছন্দমতো পাত্রে ঢেলে সাজিয়ে পরিবেশন করুন ।
মোচার পাতুরি
উপকরণ
কলার মোচা ৪ কাপ ( স্বেদ্ধকরা ), হলুদ গুড়ো১/২ চা চামচ, আদা কুচি ১/২ চা চামচ, জিরা বাটা ১/২ চা চামচ, কাঁচামরিচ বাটা ১ চা চামচ, নারকেল কোঁড়া ১ কাপ, সরষে তেল ১ কাপ, লবণ স্বাদমতো, কলাপাতা ৭/৮টি।
প্রণালী
একটি পাত্রে সব উপকরণ ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। একটি কলাপাতা চারকোনা আকারে কেটে আগুনে হাল্কা সেঁকে নিয়ে এরপর পরিমানমতো মোচার মিশ্রণ দিয়ে ভালোভাবে মুড়িয়ে সুতো বেধে দিন। এবার একটি ফ্রাইপ্যানে সামান্য তেল দিয়ে মুড়ে রাখা কলা পাতা গুলো দিয়ে ঢেকে দিন। পাতার দুই দিক লাল হয়ে পুড়ে এলে নামিয়ে গরম ভাতের সাথে পরিবেশন করুন মোচার পাতুরি।