ঢাকের কাঠিতে মুখরিত শাঁখারী বাজার
তৌকির আহমেদ, জবি প্রতিনিধি:
মা দশভূজা রুপে তাঁর সন্তানদের রক্ষা করছেন। ভক্তরা কিছু চাইলে মাতা ভক্তের মনোবাসনা পূর্ণ করেন এবং মা যে কোন বিপদ থেকে ভক্তদের রক্ষা করেন এটাই ভক্তদের বিশ্বাস। এ বিশ্বাস নিয়েই শাঁখারিবাজারে প্রায় ৪০০ মিটার রাস্তায় ৯টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দূর্গা পূজা। দূর্গা পূজাকে ঘিরে আয়োজন এর কমতি নেই পূরান ঢাকার শাঁখারিবাজারে বসবাসকারী বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের । প্রতিধ্বন্ধী পূজা কমিটি, ধ্রুবতারা পূজা কমিটি, সঙ্গামি পূজা কমিটি, শ্রী শ্রী কালী মাতা, নবকল্লোল পূজা কমিটি, নতুন কুড়ি পূজা কমিটি, সূর্য তারা পূজা কমিটি, নববানী পূজা কমিটি, শাখারীবাজার একনাম পূজা কমিটিসহ বেশ কিছু পূজা কমিটি এবার শাঁখারীবাজার সড়কে মন্ডপ ও প্রতিমা তৈরি করে দূর্গা পূজার আয়োজন করেছেন।
রাস্তার দুইপাশের দোকানে পূজা সামগ্রীর পসরা সাজিয়ে বসেছে দোকানিরা আর রাস্তার উপর অস্থায়ীভাবে তৈরি করা হয়েছে মন্ডপ ও তাতে স্থাপন করা হয়েছে প্রতিমা । রাস্তার মাঝখানে ধর্মপ্রাণ সনাতনী ধর্মাবলম্বীদের ভিড়। দেবী দূর্গার পূজা আর্চনায় মেতে উঠেছে শিশু, কিশোর ও বৃদ্ধ থেকে শুরু করে সব বয়সের মানুষ। ঢাক -ঢোল ও ঘন্টার আওয়াজে মুখরিত এখন শাঁখারীবাজার সড়ক৷
মন্ডপ ও প্রতিমা দেখতে সনাতনী ধর্মাবলম্বীদের পাশাপাশি অন্য ধর্মের উৎসুক মানুষেরাও আসছে পূজার এই উৎসব দেখতে। ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন খাবারের দোকান সাজিয়ে বসেছে দোকানিরা।
ধ্রুবতারা পূজা কমিটির সদস্য গোপাল বিশ্বাস বলেন, “এইভাবে পূজা উদযাপন আমাদের ঐতিহ্যের অংশ। আমরা ছোটবেলা থেকে দেখে আসছি এই রাস্তায় এইভাবে অস্থায়ীভাবে মন্ডপ তৈরি করে পূজা উদযাপন করতে৷”
রাকিব মোল্লা নামে একজন দর্শনার্থী বলেন, ” আমি বার বার দুর্গাপূজা দেখতে আসি। যদিও আমার ধর্ম আলাদা তবুও আমার বিশ্বাস ধর্ম যার যার উৎসব সবার। আমারা বাঙালি সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে হাঁটতে চাই, গড়তে চাই সম্প্রীতির বাংলাদেশ।”
উপমা মন্ডল নামে একজন দর্শনার্থী বলেন, “দূর্গা পূজা আমাদের সবথেকে বড় ধর্মীয় উৎসব। এই উৎসবের জন্য আমরা সারাবছর অপেক্ষায় থাকি। তাই এই উৎসব ঘিরে আমাদের আগ্রহের কমতি নেই।”
সনাতনী শাস্ত্র অনুযায়ী এবার দেবী দুর্গার আগমন ঘোটকে অর্থাৎ ঘোড়ায়। শাস্ত্র মতে, যার ফল খুব একটা শুভ নয়। শাস্ত্র অনুযায়ী দেবীর ঘোড়ায় আগমন ছত্রভঙ্গের ইঙ্গিত দেয়। এছাড়া দেবীর গমনও রয়েছে ঘোটকে। যার ফলও শুভ বার্তা দিচ্ছে না।
উল্লেখ্য যে, যে কোন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়ানোর জন্য সারা দেশের প্রতিটি পূজামণ্ডপে নিরাপত্তা রক্ষায় পুলিশ, আনসার, বিজিবি, র্যাবসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন।