পাঁচ বছরের মধ্যে আসছে স্ব-মেরামতযোগ্য ডিসপ্লের স্মার্টফোন
প্রযুক্তির উন্নয়নের সঙ্গে স্মার্টফোনেও নতুন সব পরিবর্তন আসছে, যুক্ত হচ্ছে বিভিন্ন ফিচার। সম্প্রতি সেলফোনের ভবিষ্যৎ অবস্থা নিয়ে পূর্বাভাস দিয়েছেন সিসিএস ইনসাইটের বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, ২০২৮ সাল নাগাদ বাজারে স্ব-মেরামতযোগ্য ডিসপ্লের স্মার্টফোন চলে আসবে। খবর সিএনবিসি।
২০২৪ ও এর পরবর্তী সময়ে কী ধরনের প্রযুক্তি আসবে সে-সংক্রান্ত পূর্বাভাস দিয়েছে সিসিএস ইনসাইট। সেখানে সংস্থাটি আশা প্রকাশ করে বলেছে, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে সেলফোন উৎপাদনকারীরা স্ব-মেরামতযোগ্য ডিসপ্লের স্মার্টফোন বাজারজাত করবে। এ সুবিধার ডিসপ্লেতে একটি ন্যানো কোটিং থাকবে। যদি এর ওপর কোনো স্ক্র্যাচ বা দাগ পড়ে তাহলে সেই কোটিং বাতাসের সংস্পর্শে এসে ক্ষতিগ্রস্ত জায়গা সমান করে দেবে।
সিসিএস ইনসাইটের প্রধান বিশ্লেষক বেন উড বলেন, ‘এটি সায়েন্স ফিকশনের কোনো গল্প নয়। বাস্তবেই এ কাজ করা সম্ভব হবে। তবে এর বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে প্রত্যাশা ও চাহিদা নির্ধারণ।’
স্ব-মেরামতযোগ্য ডিসপ্লে প্রযুক্তি নিয়ে দীর্ঘদিন থেকেই এ সেক্টরে একটি আলাপ রয়েছে। দক্ষিণ কোরীয় প্রতিষ্ঠান এলজি ২০১৩ সাল পর্যন্ত তাদের সেলফোনগুলোয় স্ব-মেরামত প্রযুক্তি ব্যবহারের কথা জানিয়ে আসছিল। কোম্পানিটি জি প্লেক্স নামের একটি স্মার্টফোন উন্মোচন করেছিল। এতে কার্ভড বা বাঁকানো ডিসপ্লে এবং পেছনের কভারে স্ব-মেরামতের কোটিং দেয়া হয়েছিল। তবে প্রযুক্তিটি কীভাবে কাজ করবে সে সময় এ বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।
বেন উড বলেন, ‘বর্তমানে একাধিক নতুন প্রযুক্তি নিয়ে অনেকেই কাজ করছে। যেগুলো দেখে মনে হতে পারে, এটি হয়তো ব্যতিক্রমী কিছু হবে। তবে আমরা ভেঙে যাওয়া ডিসপ্লে ঠিক হয়ে যাবে এমন কিছু বলছি না। এটি ছোটখাটো দাগের ক্ষেত্রে কাজ করবে।’
এলজি ছাড়াও আরো বেশকিছু সেলফোন উৎপাদনকারী কোম্পানি তাদের ডিভাইসে সেলফ হিলিং বা স্ব-মেরামতযোগ্য উপাদান ব্যবহারের কথা জানিয়েছে। ২০১৭ সালে মটোরোলা শেপ মেমোরি পলিমারে তৈরি একটি স্ক্রিনের পেটেন্ট আবেদন করেছিল। তাদের দাবি, ওই প্রযুক্তিতে ডিসপ্লে ফেটে গেলে কোটিংটি তা মেরামত করবে। মূলত ফেটে যাওয়া জায়গায় তাপ দেয়া হলে আবরণটি গলে মেরামতের কাজ করত।
অ্যাপলও আগে ফোল্ডিং আইফোনের জন্য একটি পেটেন্ট আবেদন করেছিল। সেখানে একটি ডিসপ্লে কভারের কথা বলা হয় যেটি ডিভাইসের ক্ষতি হলে সব মেরামতে সক্ষম। তবে এ প্রযুক্তি এখনো বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদিত সেলফোনে ব্যবহার শুরু হয়নি। এছাড়া বড় পরিসরে এ ধরনের ডিভাইস বাজারজাতের ক্ষেত্রে কিছু সমস্যাও রয়েছে। প্রথমত স্মার্টফোনের ডিসপ্লেতে নতুন প্রযুক্তি যুক্ত করার জন্য গবেষণা ও উন্নয়নে কোম্পানিগুলোকে বড় বিনিয়োগ করতে হবে। ডিভাইসের ডিসপ্লেতে কী পরিমাণ ক্ষতি হলে তা স্ব-মেরামতযোগ্য হবে সে বিষয়েও গ্রাহককে পরিষ্কার ধারণা দিতে হবে।
বেন উড জানান, যারা নতুন সেলফোনের রিভিউ দেন, ডিভাইসের গঠন নিয়ে পর্যালোচনা করেন তাদের জন্য এ প্রযুক্তি নয়। মূলত সামান্য স্ক্র্যাচ বা ক্ষতি হলে যেন ডিসপ্লে নিজে থেকে মেরামত হতে পারে সেজন্য এ প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করা হচ্ছে।