Home অপরাধ ফ্রি টিকিটের ফাঁদে ফেলে দুবাইফেরত ছেলেকে দিয়ে আনা হয় দামি পণ্য, বাবাকে জিম্মি : র‍্যাব
অক্টোবর ১৪, ২০২৩

ফ্রি টিকিটের ফাঁদে ফেলে দুবাইফেরত ছেলেকে দিয়ে আনা হয় দামি পণ্য, বাবাকে জিম্মি : র‍্যাব

ভালো চাকরি না পেয়ে যশোরের চৌগাছার নুরন্নবী (২২) দুবাই থেকে বাংলাদেশে ফিরতে চেয়েছিলেন। তবে তাঁর কাছে উড়োজাহাজের ভাড়া ছিল না। এ সময় কয়েকজন তাঁকে একটি ব্যাগ নিয়ে আসার প্রস্তাব দেয়। শর্ত ছিল এর বদলে তাঁরা নুরন্নবীর উড়োজাহাজ ভাড়া দেবেন। নুরন্নবী তাতে রাজি হন। আর শুল্ক ফাঁকি দিয়ে মূল্যবান পণ্যবোঝাই ব্যাগটি ঠিকঠাক পেতে ওই ব্যক্তিরা নুরন্নবীর বাবাকে ঢাকায় জিম্মি করে রাখেন। ৯ অক্টোবর এ ঘটনা ঘটে। আজ শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

র‍্যাব বলছে, নুরন্নবীর বাবাকে না পেয়ে তাঁর পরিবারের করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত শুরু হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার শান্তিনগরের একটি বাসা থেকে নুরন্নবীর বাবা সৈয়দ আলী মণ্ডলকে (৬৫) উদ্ধার করা হয়। এ সময় খোরশেদ আলম (৫২), তাঁর দুই সহযোগী জুয়েল রানা মজুমদার (৪০) ও মাসুম আহমেদকে (৩৫) গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ৬০ লাখ টাকা মূল্যমানের স্বর্ণ, ল্যাপটপ, মোবাইল, বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্রসাধনীসহ বিভিন্ন ধরনের বিদেশি পণ্য।

র‍্যাব বলছে, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা একটি চক্র হিসেবে কাজ করতেন। তাঁরা মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে থাকেন। দেশে ও বিদেশে এই চক্রের ১২ থেকে ১৫ জন সদস্য রয়েছেন। প্রবাসফেরত বিভিন্ন যাত্রীদের মাধ্যমে ৫–৬ বছর ধরে এভাবে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে মূল্যবান পণ্য দেশে নিয়ে আসছেন তাঁরা। তারপর এগুলো গুলিস্তান ও পল্টনসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে অসাধু ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করা হয়। চক্রের প্রধান মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশের প্রবাসী আবু ইউসুফ নামের এক ব্যক্তি।

র‍্যাবের সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন প্রবাসী গ্রুপে ফ্রি টিকিটে বাংলাদেশে আসার কথা বলে বিজ্ঞাপন প্রচার করতেন চক্রের সদস্যরা। যাঁরা ফ্রি টিকিটে দেশে আসতে আগ্রহ প্রকাশ করতেন, তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন চক্রের মূল হোতা আবু ইউসুফ। তারপর ২৫–৩০ কেজি ওজনের ব্যাগ বহন করার শর্তে তাঁদের টিকিটের ব্যবস্থা করে দেন। এ রকম ব্যাগগুলোতে ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকার পণ্য থাকে। ব্যাগ পেতে প্রবাসীদের স্বজনকে জিম্মি করা হয়।

বিক্রি করা মালামালের লভ্যাংশের একটি অংশ চক্রের সদস্যরা ভাগ করে নিতেন। পণ্যের দামসহ লাভের একটি বড় অংশ হুন্ডি বা বিভিন্ন অবৈধ উপায়ে মধ্যপ্রাচ্যে থাকা চক্রের মূল হোতা আবু ইউসুফের কাছে পাঠানো হতো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *