খুনের আসামিকে কুপিয়ে হত্যা, পা কেটে নিয়ে যাওয়ায় ৩ যুবক গ্রেপ্তার
কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার মগনামায় খুনের আসামি আবু ছৈয়দকে কুপিয়ে হত্যা ও পা কেটে নিয়ে যাওয়ায় ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) মাঝরাতে মগনামার আফজলিয়াপাড়ায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
শনিবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে কক্সবাজার র্যাব-১৫ কার্যালয়ে অধিনায়ক লে. কর্নেল এইচএম সাজ্জাদ হোসেন প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন কক্সবাজারের পেকুয়ার মগনামার আফজলিয়াপাড়ার নুরুল ইসলামের ছেলে নেজামুল ইসলাম মুজাহিদ (২৮), একই এলাকার মৃত নুরুন্নবীর দুই ছেলে আমিরুজ্জামান (২৮) ও জামিল ইব্রাহিম ছোটন (২৫)।
র্যাব জানায়, গত ১০ অক্টোবর (মঙ্গলবার) বিকাল ৩টার দিকে পেকুয়ার আফজলিয়াপাড়ায় পূর্ব শত্রুতার জেরে আবু ছৈয়দকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যার পর একটি পা কেটে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় আবু ছৈয়দের স্ত্রীসহ ৪ জন গুরুতর আহত হয়। বর্বর এ হত্যাকাণ্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশ হওয়ার পর সারাদেশে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। একইসঙ্গে এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তার ও হত্যার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে এলাকাবাসীও মানববন্ধনসহ নানাভাবে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
তিনি আরও জানান, পরবর্তীতে ১১ অক্টোবর নিহতের ছেলে ছৈয়দ মোহাম্মদ ইমন বাদী হয়ে এজাহানামীয় ২৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৪/৫ জনকে আসামি করে পেকুয়া থানায় মামলা দায়ের করেন। বিষয়টি অবগত হয়েই কক্সবাজার ছায়াতদন্ত শুরু এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতায়, শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) মধ্যরাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে একটি চৌকস আভিযানিক দল পেকুয়ার মগনামায় অভিযান চালিয়ে মামলার এজাহারনামীয় ২ নম্বর আসামি ও অন্যতম প্রধান পরিকল্পনাকারী মোজাহিদসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয় স্বীকার করে লোমহর্ষক বর্ণনা দেন। জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, ঘটনার ৩ দিন আগে হত্যাকারীরা নিজেদের মধ্যে গোপন সভা করে হত্যার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেন। পরিকল্পনা মতে গত ১০ অক্টোবর বিকাল ৩টায় নিহত আবু ছৈয়দ তার শ্বশুরবাড়িতে অবস্থান করছেন- এমন সংবাদের ভিত্তিতে তারা সশস্ত্র অবস্থায় সেখানে হানা দেন। কিছু বুঝে উঠার আগেই তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে আবু ছৈয়দকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। প্রাণ বাঁচাতে আবু ছৈয়দ খাটের নিচে ঢুকে পড়লে সেখান থেকে তাকে টেনে-হিঁচড়ে বের করে হাত-পা চেপে ধরে কোপানোর পর মৃত ভেবে ফেলে রেখে চলে যান। এ সময় আবু ছৈয়দের ডান পা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে নিয়ে যান তারা। পরবর্তীতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান আবু ছৈয়দ।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) কক্সবাজারের পেকুয়ায় আলোচিত জয়নাল হত্যা মামলার আসামি আবু ছৈয়দকে (৩৮) কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। এ সময় তার পা কেটে নিয়ে যায় তারা। নিহত আবু ছৈয়দ পেকুয়া মগনামা ইউনিয়নের আফজলিয়াপাড়া এলাকার মৃত বদিউল আলমের ছেলে।