মাছ-মাংস-সবজি, স্বস্তি নেই কোনোটাতেই
সপ্তাহ না ঘুরতে আবারও দাম বেড়েছে মাছ, মাংস ও শাকসবজির। সেই সঙ্গে বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। দাম বাড়ার কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা দুষেছেন টানা বৃষ্টিকে। বলছেন, বৃষ্টিতে সরবরাহ কমে যাওয়ায় বাড়ছে দাম। বাজারে অন্যান্য পণ্যের দামে বড় কোনো পরিবর্তন লক্ষ করা না গেলেও চাল, ডাল, ডিম, আলু ও সয়াবিনের মতো নিত্যপণ্যের দাম মোটামুটি স্থির হয়ে আছে উচ্চমূল্যেই।
আজ শুক্রবার (৬ অক্টোবর) রাজধানীর বেশ কয়েকটি বাজার সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৯০-২০০ টাকায়। গত সপ্তাহে যা ছিল ১৮০-১৯০ টাকা। সোনালি মুরগির দাম ছিল প্রতি কেজি ৩১০-৩২০ টাকা। আজ বাজারে এই মুরগি বিক্রি হয়েছে ৩২০-৩৩০ টাকায়। মুরগি বিক্রেতা রফিক বলেন, ‘বৃষ্টিবাদল হলে কাঁচামালের দাম একটু বাড়ে। মুরগি আসছে কম, তাতে দাম একটু বেড়েছে। দুই-এক দিন গেলে বোঝা যাবে দাম আরও বাড়বে কি না।’
‘সরকার দাম ঠিক করে দিচ্ছে ঠিকই। কিন্তু এটা এই ঠিক করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। বাজারে এলে সেই নির্ধারিত দামে কোন পণ্য কিনতে পারি না’
– নুরুল করিম, ক্রেতা
এদিকে দেশি ও আমদানি করা- উভয় পেঁয়াজের দাম কেজিতে পাঁচ টাকা বেড়েছে। ফলে দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৯০-৯৫ টাকায় এবং আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৭০-৭৫ টাকায়। সরকার গত ১৪ সেপ্টেম্বর যে তিনটি পণ্যের দাম বেঁধে দিয়েছিল, তার একটি দেশি পেঁয়াজ। তবে দাম বেঁধে দেওয়ার পরও সরকার নির্ধারিত ৬৪-৬৫ টাকায় দেশি পেঁয়াজ বিক্রি করছেন না ব্যবসায়ীরা।
মালিবাগ বাজারে বাজার করতে আসা ক্রেতা নুরুল করিম বলেন, ‘সরকার দাম ঠিক করে দিচ্ছে ঠিকই। কিন্তু এটা এই ঠিক করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। বাজারে এলে সেই নির্ধারিত দামে কোন পণ্য কিনতে পারি না।’
দেশি পেঁয়াজের পাশাপাশি ডিম ও আলুর দাম বেঁধে দিয়েছিল সরকার। ডিমের ডজন ১৪৪ টাকায় নির্ধারণ করা হলেও বিক্রি হচ্ছে ১৪৫-১৫০ টাকায়। আলুর খুচরা দাম প্রতি কেজি ৩৫-৩৬ টাকায় বেঁধে দেওয়া হলেও বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৫০ টাকায়। অন্যদিকে মোটা, মাঝারি ও চিকন- কোনো চালের দাম কমেনি। ডালের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। বোতলজাত সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে প্রতি লিটার ১৬৯ টাকায়।
মাংসের মূল্য বৃদ্ধি না পেলেও আগের মতো উঁচু দামে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭৫০-৮০০ টাকা আর খাসির মাংসের মূল্য ১০০০-১১০০ টাকা। মাছের বাজারেও একই অবস্থা। চাষের পাঙাশ ও তেলাপিয়া আকারভেদে ২০০-২৫০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। রুই মাছের দাম পড়ছে প্রতি কেজি ৩৫০-৪৫০ টাকা। ইলিশের মৌসুম শেষের দিকেও ১ কেজি আকারের ইলিশের দাম ১৩০০-১৫০০ টাকা। পুরো মৌসুম জুড়ে ইলিশ এবার ক্রেতাদের নাগালের বাইরেই ছিল।
স্বস্তি নেই সবজির বাজারেও। বৃষ্টির কারণে বাজারে সবজির সরবরাহ কমেছে, বেড়েছে বেশির ভাগ সবজির দাম। গোল আকারের বেগুন কিনতে হচ্ছে প্রতি কেজি ৮০-১০০ টাকায়। লম্বা বেগুনের দাম একটু কম। ঝিঙা, ধুন্দুল ও চিচিঙ্গার মতো সবজির কেজি ৬০ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে না। সস্তার সবজি বলতে শুধু পেঁপে, কেজি ৩০-৪০ টাকা। পটোল ও ঢেঁড়সের দামও প্রতি কেজি ৫০ টাকার ওপরে। কাঁচা মরিচের কেজি পড়ছে ২০০-২২০ টাকা।