জামিনে বেরিয়ে বখাটেদের হুমকি, বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ কিশোরীর
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বখাটেদের হুমকিতে এক কিশোরীর বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেছেন তার বাবা। ওই কিশোরী (১৩) স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। মানসিকভাবে বিপর্যস্ত কিশোরী চার মাস ধরে বিদ্যালয়ে যেতে পারছে না।
কিশোরীর বাবা দিনমজুর। তিনি বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, গত ১২ মে বিদ্যালয় থেকে বাড়ি ফেরার পথে সবুজ (২১) ও শুভ (১৯) নামের দুই বখাটে তাঁর মেয়েকে জোর করে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। সেটা করতে না পেরে তাঁরা তাঁর মেয়েকে গাড়িচাপা দিতে চেয়েছিলেন। মেয়েকে মারধর ও নির্যাতন করেন। এ ঘটনায় তিনি সেদিনই থানায় মামলা করেন। সেই মামলায় সবুজকে ওই রাতেই পুলিশ গ্রেপ্তার করে। আরেক আসামি শুভ কয়েক দিন পর আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। কিছুদিন পর তাঁরা দুজনই জামিনে মুক্তি পান।
বাবার অভিযোগ, মুক্তি পাওয়ার পর সবুজ ও শুভ দলবল নিয়ে এলাকায় এসে বাড়িতে ঢিল ছোড়েন। গালিগালাজ করে মেয়েকে তুলে নেওয়ার হুমকি দেন। বখাটেদের ভয়ে এখন মেয়েকে বাড়িতে না রেখে স্বজনের বাড়িতে রেখেছেন। বখাটেরা তাঁকেও (বাবা) হত্যার হুমকি দিচ্ছেন।
কিশোরীর বাবা বলেন, ‘একমাত্র সন্তানটাকে পড়াশোনা করিয়ে বড় করার স্বপ্ন ছিল। বখাটেদের ভয়ে এখন মেয়ের স্কুলে যাওয়া বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছি। বাবা হয়েও মেয়ের নিরাপত্তা দিতে পারছি না। পড়ার প্রতি খুব আগ্রহ ছিল মেয়েটার। স্কুল বন্ধ হওয়ায় মেয়েটা কাঁদছে।’
বখাটের ভয়ে সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীর বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ হওয়া প্রসঙ্গে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওই ছাত্রীর বিদ্যালয়ে না আসার বিষয়টি আমি জানি। ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে যোগাযোগ করে বিদ্যালয়ে আসতে বললেও তার বাবা-মা মেয়েকে পাঠাতে সাহস করছেন না।’
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য বলেন, ‘মেয়েটির বাবা আমাকে বলেছেন যে বখাটেদের ভয়ে মেয়েকে বিদ্যালয়ে পাঠাচ্ছেন না। আমি থানা-পুলিশকে বিষয়টি জানিয়েছি। তাঁকে অভয় দিয়ে মেয়েকে বিদ্যালয়ে পাঠাতে বলেছি। কিন্তু তিনি নিরাপত্তাহীনতার কথা বলে মেয়েকে আর বিদ্যালয়ে পাঠাননি।’
বখাটেদের ভয়ে কিশোরীর বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধের বিষয়ে মিরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন বলেন, ওই কিশোরীকে বিদ্যালয় থেকে ফেরার পথে হেনস্তা করার ঘটনায় এক যুবককে আগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। আরেকজন আদালতে আত্মসমর্পণ করেছিলেন। ওই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। মামলাটি চলমান। জামিনে এসে আসামিরা আবার ওই ছাত্রীকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন, এমনটি তাঁদের কেউ জানাননি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন তিনি।