শ্রীলংকাকে ২৫৭ রানে আটকে দিলো বাংলাদেশ
এশিয়া কাপে শ্রীলংকাকে ২৫৭ রানে আটকে দিয়েছে বাংলাদেশ। গতকাল কলম্বোর আর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে শ্রীলংকার বিপক্ষে টস জিতে প্রথমে বোলিং বেছে নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। আগে ব্যাট করতে নেমে সাদিরা সামারাবিক্রমা ও কুশল মেন্ডিসের জোড়া হাফ-সেঞ্চুরিতে এশিয়া কাপ সুপার ফোরে নিজেদের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথমে ব্যাট করে ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৫৭ রান করে শ্রীলংকা। সামারাবিক্রমা ৯৩ ও কুশল ৫০ রান করেন। বাংলাদেশের বোলাররা শুরু থেকেই লাইন-লেন্থ বজায় রেখে বল করেছেন। তবে লঙ্কান ব্যাটাররা অবশ্য অতিমাত্রায় সাবধানী হওয়ায় সেভাবে উইকেট পড়েনি। তবে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখে বল করেই গেছে টাইগাররা। সাদিরা সামারাবিক্রমা একটা প্রান্ত ধরে রেখে শেষ বল পর্যন্ত খেলে গেছেন বলেই লড়াকু পুঁজি পেয়েছে শ্রীলঙ্কা। ফলে এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলার স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখতে বাংলাদেশকে সামনে টার্গেট ছিল ২৫৮ রান। গতকাল ব্যাট করতে নেমে তাসকিনের করা ম্যাচের প্রথম ওভারের প্রথম বলেই বাউন্ডারি দিয়ে ইনিংস শুরু করেন শ্রীলংকার ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা। ওভারের চতুর্থ বলে নিশাঙ্কাকে আম্পয়ার লেগ বিফোর আউট দিলেও রিভিউ নিয়ে এ যাত্রায় বেঁচে যান নিশাঙ্কা। ষষ্ঠ ওভারে দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে শ্রীলংকার আরেক ওপেনার দিমুথ করুনারতœকে (১৮) শিকার করে বাংলাদেশকে প্রথম সাফল্য এনে দেন হাসান। দলীয় ৩৪ রানে প্রথম উইকেট পতনের পর দ্বিতীয় উইকেটে জুটি বেঁধে শ্রীলংকার রান ১শতে নিয়ে যান নিশাঙ্কা ও তিন নম্বরে নামা কুশল মেন্ডিস। অবশ্য বাংলাদেশের ফিল্ডারদের ভুলে দলের রান তিন অংকে নিতে সক্ষম হন নিশাঙ্কা-কুশল।
ব্যক্তিগত ২৯ রানে শরিফুলের বলে শামীম হোসেনের হাতে ক্যাচ দিয়ে জীবন পান কুশল। শেষ পর্যন্ত ২৪তম ওভারে শরিফুলের হাত ধরে গুরুত্বপূর্ণ ব্রেক-থ্রু পায় বাংলাদেশ। ৫টি চারে ৬০ বলে ৪০ রান করা নিশাঙ্কাকে লেগ বিফোর আউট করেন শরিফুল। কুশলের সাথে ১০৭ বলে ৭৪ রানের জুটি গড়েন নিশাঙ্কা। ব্রেক-থ্রুর এক ওভার পর শ্রীলংকা শিবিরে আবারও আঘাত হানেন শরিফুল। ২৬তম ওভারের প্রথম বলে ওয়ানডেতে ২৪তম হাফ-সেঞ্চুরি করা কুশলকে শিকার করেন তিনি। ডিপ থার্ডম্যানে তাসকিনকে ক্যাচ দেন ৬টি চার ও ১টি ছক্কায় ৭৩ বলে ৫০ রান করা কুশল। পরপর দুই ওভারে শরিফুলের জোড়া আঘাতে দুই সেট ব্যাটারকে হারিয়ে চাপে পড়ে শ্রীলংকা। এ অবস্থায় লংকানদের উপর চাপ বাড়িয়ে দেন তাসকিন ও হাসান। লংকান মিডল অর্ডারের দুই ভরসা চারিথ আসালঙ্কাকে ১০ রানে তাসকিন এবং ধনাঞ্জয়া ডি সিলভাকে ৬ রানে আউট করেন হাসান। ৩৮তম ওভারে ১৬৪ রানে পঞ্চম উইকেট পতনে শ্রীলংকাকে চাপে ফেলে দেয় বাংলাদেশের বোলাররা। দলকে চাপমুক্ত করতে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন সাদিরা সামারাবিক্রমা ও অধিনায়ক দাসুন শানাকা। ষষ্ঠ উইকেটে হাফ-সেঞ্চুরির জুটিতে শ্রীলংকাকে রান ২শ পার করেন তারা। এই জুটিতে ৪৪ বল খেলে ওয়ানডেতে পঞ্চম হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন সামারাবিক্রমা। ৪৭তম ওভারে শানাকাকে বোল্ড করে জুটি ভাঙ্গেন হাসান। সামারাবিক্রমার সাথে ৫৭ বলে ৬০ রান যোগ করেন শানাকা। এর মধ্যে ৩২ বলে ২৪ রান করেন শানাকা। দলীয় ২২৪ রানে শানাকা ফেরার পর শ্রীলংকাকে ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৫৭ রানের সংগ্রহ এনে দেন সামারাবিক্রমা। ঝড়ো গতিতে ব্যাট চালিয়ে ৮টি চার ও ২টি ছক্কায় ৭২ বলে ৯৩ রান করেন ইনিংসে শেষ বলে আউট হওয়া সামারাবিক্রমা। গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৫৪ রান করেছিলেন তিনি। বাংলাদেশের হাসান ৫৭ রানে ও তাসকিন ৬২ রানে ৩টি করে এবং শরিফুল ৪৮ রানে ২টি উইকেট নেন।