শিক্ষা ক্যাডারে সারাদেশে দ্বিতীয় হলেন ক্যাডেট কায়সার
এনামুল হাফিজ,
কায়সার আহমেদ শাহ, পারিবারিক নাম বাপ্পা। ছোট থেকেই খুব ডানপিটে আর দুরন্ত ছিলেন। পড়াশোনা, খেলাধুলা, গান ,কবিতা আবৃত্তি, নাটক, অভিনয় সর্বক্ষেত্রে পারদর্শী ছোট থেকেই। পড়াশুনায় ভালো দেখে ব্যাংকার বাবা এবং স্কুল শিক্ষিকা মা ছেলেকে ক্যাডেটে পড়ানোর জন্য মনস্থির করেন। হতাশ করেননি কায়সার। তৎকালীন তুমুল প্রতিযোগিতাময় পরীক্ষায় কুমিল্লা ক্যাডেট কলেজে ভর্তি হয়। পারিপার্শ্বিক দক্ষতায় খুব সহজেই শিক্ষক ও সিনিয়র-জুনিয়রদের মন জয় করেন।
প্রতিবছরই খেলাধুলা,গান সহ সকল কর্মকান্ডে পুরস্কার অর্জন করতে থাকেন। ভালোই যাচ্ছিল দিন। সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তা ও ফুটবলার পিতা কমল উদ্দিন শাহ এর আকস্মিত মৃত্যুতে ছন্দপতন ঘটে পরিবারের। শিক্ষার্থী ২ ভাইকে নিয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মা খাইরাতুল হাসিনা মীনা শক্ত হাতে পরিবারের হাল ধরেন। এসএসসি ও এইচএসসি উভয়ই পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ ফাইভ পেয়ে কুমিল্লা ক্যাডেট কলেজ থেকে উত্তীর্ণ হন কায়সার। ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত রসায়ন বিভাগে। তুমুল গান পাগল ছেলেটি ধর্মীয় লাইনে আগ্রহী হয়, ধারণ করেন সুন্নতি লেবাস। কৃতিত্বের সাথে অনার্স মাস্টার্স সম্পন্ন করার পরেও হচ্ছিল না কাঙ্ক্ষিত সরকারি চাকরি। নানান কারণে কিছুটা হতাশ হয়ে অবশেষে মা যে প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক সেই স্কুলেই যোগদান করেন সহকারী প্রাথমিক শিক্ষক হিসেবে। বহু পূর্বেই নিবন্ধনকৃত ইসলাম ধর্মের আবশ্যকীয় ফরজ পবিত্র হজব্রত পালন করে মা সহ সম্প্রতি দেশে আসেন। দেশে ফেরার দুইদিন পরেই স্রষ্টা শুভ সংবাদ শোনান। ৪১তম শিক্ষা ক্যাডারে সারা দেশে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছেন কায়সার।৪৪ এ ভাইবা দিয়েছেন, সেখানে ও ভাল কিছু হবার প্রত্যাশায় আছেন। একমাত্র সহোদর খায়রুল আহমেদ শাহ পূর্বধলা ডিগ্রি কলেজ এর ইংরেজির প্রভাষক। পূর্বধলা খলিশাউর গ্রামের ক্যাডেট কায়সারের এ সাফল্যে তার এলাকার সকলে উচ্ছসিত । মহান স্রষ্টার দরবারে কৃতজ্ঞতার পাশাপাশি দেশবাসীর কাছে কায়সার দোয়া চেয়েছেন। শীঘ্রই পারিবারিক পছন্দে জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু করবেন বলে তিনি জানান।