পিস্তল ঠেকিয়ে ছাত্রলীগের নেতাকে তুলে নেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ আরেক নেতার বিরুদ্ধে
ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতাকে পিস্তল ঠেকিয়ে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে রাজধানীর বিমানবন্দর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু সুফিয়ান ওরফে শ্রাবণের বিরুদ্ধে। গত বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর দক্ষিণখানের গাওয়াইর কাজীবাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী ব্যক্তির নাম মো. সবুজ। তিনি বিমানবন্দর থানা ছাত্রলীগের সাবেক সহসম্পাদক। সবুজ বর্তমানে উত্তরার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তিনি একসময় আবু সুফিয়ানের সঙ্গে রাজনীতি করতেন। এ ঘটনায় আবু সুফিয়ানের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি।
সবুজের অভিযোগ, কয়েক দিন ধরে আবু সুফিয়ান তাঁকে মুঠোফোনে এসব বিষয় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছিলেন। এরপর বৃহস্পতিবার রাত দেড়টার দিকে দক্ষিণখানের গাওয়াইর কাজীবাড়ি এলাকায় আবু সুফিয়ান তাঁর মাথায় পিস্তল ঠেকান। কিছুক্ষণের মধ্যে জড়ো হন আরও ৩০ থেকে ৩৫ জন। তাঁরা সবাই তাঁকে প্রাইভেট কারে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় তিনি চিৎকার করলে আশপাশের কিছু লোক জড়ো হন।একপর্যায়ে তাঁকে মারধর করেন। এরই একপর্যায়ে তাঁরা কয়েকজন মিলে তাঁকে মারতে মারতে একটি অটোরিকশায় করে ‘কেসি হাসপাতালের’ দিকে নিয়ে যেতে থাকেন। সেখানে ঘটনাক্রমে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক ও দক্ষিণখান ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এস এম তোফাজ্জল হোসেন তাঁদের থামান।
পরে আমি নিজ উদ্যোগে স্থানীয় কেসি হাসপাতালের সামনে গিয়ে তাদের পথ আটকাই। দেখি ছাত্রলীগের সভাপতি আবু সুফিয়ান শ্রাবণ ও তার সঙ্গে আরও কয়েকজন। ওই ছেলেও (সবুজ) আমাকে দেখে ‘কাকা, বাঁচান বলে’ চিৎকার শুরু করেছে। পরে আমি সব কয়টাকে অটোরিকশা থেকে নামাই। মারধরের কারণ জিজ্ঞাসা করি। কেউ কোনো সঠিক উত্তর দিতে পারছিল না। পরে পুলিশ এলে বিষয়টি মীমাংসার কথা বলে চলে আসি।’ তিনি আরও বলেন, কেউ কোনো অন্যায় করে থাকলে সেটার জন্য আইন আছে, সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা আছেন, তাঁদের নিয়ে বসা যেত। কিন্তু এভাবে রাতের অন্ধকারে একজনকে মারধর করা মোটেও ঠিক হয়নি।
এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিমানবন্দর ছাত্রলীগের সভাপতি আবু সুফিয়ান।
তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার বিয়ে, সন্তান থাকা বা চাঁদা তোলা নিয়ে যা বলা হয়েছে, সব মিথ্যা ও বানোয়াট। যারা এসব ছড়িয়েছে, আমি তাদের বিরুদ্ধে সাইবার ক্রাইমে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’ সবুজকে মারধরের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সবুজের সঙ্গে আমার এক ছোট ভাইয়ের আগে থেকে ঝামেলা ছিল। সেই সূত্রে ওই ছোট ভাইয়ের লোকজন সবুজকে মারধর করছিল। পরে পুলিশ তাদের ধরে ফেললে খবর পেয়ে আমি সেখানে যাই। আমি কাউকে মারধর করিনি। কেউ বলে থাকলে মিথ্যা বলেছে।’
এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে দক্ষিণখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ–সংক্রান্ত কোনো অভিযোগ এখনো আমরা পাইনি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মারধরের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন দক্ষিণখান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. রেজাউল করিম। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি এটা তাদের নিজেদের (ছাত্রলীগ) মধ্যে গন্ডগোল। আমি বলেছিলাম, তাদের আইনগত কোনো সহযোগিতা লাগলে যেন থানায় যোগাযোগ করে। কিন্তু পরে আর এ ব্যাপারে কেউ থানায় আসেনি।’