দুর্গাপুরে প্রশাসন ম্যানেজ করেই চলছে চোরাই পাথরের ব্যবসা
মাসুম বিল্লাহ, দুর্গাপুর(নেত্রকোনা)প্রতিনিধি : নেত্রকোনার দুর্গাপুরে বিভিন্ন বালুমহাল থেকে স্তুপ করা সরকারি পাথর প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই দিনে রাতে চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে একটি চক্র। এতে সরকার হারাচ্ছে বিপুল পরিমান রাজস্ব।
এ নিয়ে শনিবার বালুমহালের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে জানা গেছে, সোমেশ্বরী নদীতে পাঁচটি বালুমহাল রয়েছে। এর মধ্যে এক বছরের জন্য পাঁচটি ঘাটের শুধু বালু উত্তোলনের জন্য ইজারা দেওয়া হলেও বালুর সঙ্গে উত্তোলিত পাথর কোনো ইজারা না দেওয়ায় সেগুলো সরকারি মালিকানাতেই থেকে যায়। উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে ১৫দিন পর পর উত্তোলিত পাথর গুলো সরকারি নিলামের মাধ্যমে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অপসারনের জন্য সময় দিলেও একটি চক্র পাথর চোরাইয়ের ধান্ধায় থেকে যায়। পাথর ব্যবসায়ীরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিলামকৃত পাথর নেওয়ার পরেও স্থানীয় ১ ও ২নং বালু মহালের ইজারাদার (রুহী এন্টারপ্রাইজ) ও স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় উত্তোলিত সরকারি পাথর গুলো সুবিধামতো সময়ে চোরাকারবারিরা চুরি করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতিনিয়ত। শুক্রবার (৪ আগষ্ট) সন্ধ্যায় ২নং বালু মহালের চৈতাটি ঘাট থেকে ১টি বাল্কহেড ও ১টি বড় ট্রলার এবং কাকৈরগড়া ইউনিয়নের রামবাড়ী নদীঘাট থেকে চোরাই পাথর বোঝাই ২টি বড় ট্রলার স্থানীয়রা আটক করলেও এখন পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ প্রশাসন।
স্থানীয় পাথর ব্যবসায়ী আজিজুল বলেন, উপজেলা প্রশাসন প্রতি ১৫দিন পর পর স্তুপকৃত পাথর নিলামের মাধ্যমে ডাক দেন। কিন্ত কিছু অসাধু ব্যবসায়ী নিধারিত ১৫দিন পার হয়ে যাওয়ার পরে স্থানীয় প্রশাসন ম্যানেজ করেই চালিয়ে নেয় চোরাই পাথরের ব্যবসা। স্থানীয়রা বার বার পাথর আটক করলেও ওই পাথর কোথায় যায় ?
আরেক পাথর ব্যবসায়ী নুর নবী বলেন, গত কিছুদিন আগেও স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় আমরা চোরাইকৃত পাথর আটক করে উপজেলা ও পুলিশ প্রশাসন কে খবর দেই কিন্তু পুলিশ এসে কোন ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো আমাদেরকে ভয়ভীতি দেখিয়ে আটককৃত পাথরের গাড়ী ছেড়ে দেয়। এখন চোরাইকৃত পাথর আটকের কাজ আমরা করবো না পুলিশ প্রশাসন করবে এটা দেখবে কে ?
এ নিয়ে দুর্গাপুর থানার ওসি মো. শিবিরুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে বারংবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রাজীব-উল-আহসান বলেন, সরকারি ভাবে পাথর নিলাম দেয়ার পর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পাথর সরিয়ে না নেয়া হলে ওই পাথর সরকারি সম্পত্তি। চোরাই ভাবে পাথর নেয়ার কোন সুযোগ নাই। গতকাল কিছু চোরাই পাথর তেরীবাজার ঘাট থেকে স্থানীয়রা আটক করে আমাকে জানালে, আমি ওই পাথর আগামী নিলামের জন্য নদীতেই আনলোড করিয়েছি।