Home বিশ্ব মণিপুরে দুই নারীকে বিবস্ত্র করে হেনস্তা, ‘ক্ষমার অযোগ্য’ বললেন মোদি
জুলাই ২০, ২০২৩

মণিপুরে দুই নারীকে বিবস্ত্র করে হেনস্তা, ‘ক্ষমার অযোগ্য’ বললেন মোদি

গত কয়েক মাস ধরে ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরে জাতিগত সংঘাত চলছে। তবে এ নিয়ে প্রথমবারের মতো সরব হলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

রাজ্যে দুই আদিবাসী তরুণীকে বিবস্ত্র করে প্রকাশ্যে হাঁটতে বাধ্য করা এবং পরে তাদেরকে ধর্ষণের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বিচারের আওতায় আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।

সেই সঙ্গে এ ঘটনাকে সভ্যসমাজের জন্য ‘কলঙ্কজনক’ উল্লেখ করে বৃহস্পতিবার ভারতের পার্লামেন্ট লোকসভার বর্ষাকালীণ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার হৃদয় আজ ক্রোধে, যন্ত্রণায় ভারাক্রান্ত। মণিপুরের যে ঘটনাটি আমাদের সামনে এসেছে— যে কোনো সভ্য সমাজের জন্য তা লজ্জাকর, কলঙ্ক। মণিপুরের মেয়েদের সঙ্গে যা ঘটেছে, তা ক্ষমার অযোগ্য। অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে আইন তার সর্বশক্তি দিয়ে চেষ্টা করবে।

প্রসঙ্গত, ভারতের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি মণিপুরের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওটিতে দেখা গেছে, দুই মণিপুরি তরুণীকে বিবস্ত্র করে এক দল উত্তেজিত জনতা রাস্তা দিয়ে হাঁটিয়ে একটি মাঠের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। পরে জানা গেছে, সেই মাঠে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন ওই দুই নারী।

ভিডিওটি ধারণ করা হয়েছিল গত ৪ মে। তার আগের দিন ৩ মে রাজ্যের হিন্দু ধর্মাবলম্বী মেইতি ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী কুকি-চিন জনগোষ্ঠীর মধ্যে জাতিগত দাঙ্গায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল মণিপুর।

সংঘাতের শুরু হয়েছিল মণিপুর হাইকোর্টের একটি রায়কে ঘিরে। গত ৩ মে হাইকোর্ট মণিপুরের সংখ্যাগরিষ্ঠ জাতিগোষ্ঠী মেইতিদের সাংবিধানিকভাবে তফসিলি উপজাতি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার ব্যাপারটি বিবেচনা করতে বলেন। এই রায়ের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে রাজধানী ইম্ফলসহ রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় জাতিগত দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে।

বিজেপিশাসিত মণিপুরে দাঙ্গা থামাতে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর রিজার্ভ ফোর্স পাঠানো ব্যতীত এতদিন দৃশ্যত কোনো পদক্ষেপ নেয়নি কেন্দ্রীয় সরকার। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো কয়েকবার সরব হলেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বৃহস্পতিবার আগ পর্যন্ত এ ইস্যুতে কোনো বক্তব্যও দেননি।

রাজ্যটিতে এখনো অব্যাহত রয়েছে সংঘাত এবং গত দুই মাসের দাঙ্গায় অন্তত ১২০ জনের মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছেন হাজারেরও বেশি মানুষ। সেই সঙ্গে ধ্বংস হয়েছে অসংখ্য বাড়িঘর, গির্জা, মন্দির ও সরকারি স্থাপনা, বাড়ি-ঘর ছেড়ে মিজোরাম, আসাম ও নিকটবর্তী অন্যান্য রাজ্যের আশ্রয়শিবিরগুলোতে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার মানুষ।

এদিকে, বুধবার পার্লামেন্টে মোদির বক্তব্য শেষ হওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যে এক টুইটবার্তায় মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং এক টুইটবার্তায় বলেন, ৪ মে’র ওই ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে একজনকে গ্রেফতার করেছে রাজ্যপুলিশ। বাকিদের গ্রেফতারেও অভিযান শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন বীরেন।

টুইটবার্তায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘অপরাধীদের ধরতে রাজ্যজুড়ে ব্যাপক অভিযান শুরু হয়েছে এবং আমি নিশ্চয়তা দিয়ে বলছি— এই ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদেরকে বিচারের আওতায় এনে সর্বোচ্চ সাজা দেওয়া হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *