Home নির্বাচন বাবা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সম্পদ
জুন ২৬, ২০২৩

বাবা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সম্পদ

বাবা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সম্পদ। আদর, স্নেহ, ভালোবাসা, আস্থা, ভরসা, বিশ্বস্ততা আর পরম নির্ভরতার নাম বাবা। অসংখ্য গুণাবলি দিয়ে আল্লাহতায়ালা শ্রেষ্ঠ নেয়ামত বাবাকে নির্ধারণ করে সন্তানকে দিয়েছেন।  পরকালেও হিসাবের দিন আদম সন্তানদের নামের সঙ্গে যার নাম যুক্ত করে ডাকা হবে তিনি হলেন বাবা। বাবা ডাকটা সবচেয়ে সুন্দরও মধুর। জীবনে সব কিছু বিসর্জন, বহু ত্যাগ স্বীকার করে সন্তানকে ছায়ার মতো আগলে রাখেন একমাত্র বাবা।

জীবনের সব ক্ষেত্রে বাবা থেকে বেঁচে থাকার শক্তি পায় সন্তান। প্রতিটি সন্তানের কাছে বাবা মানে শক্তি সাহস আর অনুপ্রেরণা। বাবার প্রতি সন্তানের চিরন্তন ভালোবাসার প্রকাশ প্রতিদিনই ঘটে। বাবার ভালোবাসা বিশেষ কোনো একদিনের মাঝে সীমাবদ্ধ থাকে না। সন্তানের জন্য প্রতিদিন বাবা দিবস। বাবা মানে একটু শাসন, অনেক বেশি সাগর সমতুল্য ভালোবাসা।

বাবা নামে মানুষটা বটবৃক্ষের মতো। যে বৃক্ষের ছায়া সন্তানের জন্য একমাত্র অবলম্বন। জীবনের সব কিছু থেকে বাঁচিয়ে রাখে। সন্তান দৃঢ়বিশ্বাসের সঙ্গে শক্তি সাহস ভরসা পায় যার কাছে থেকে তিনি হলেন বাবা। বাবা নামক বৃক্ষটি যখন হারিয়ে যায়। সন্তানের জীবনে নেমে আসে দুঃখ। তখন বটবৃক্ষের নিচে থাকা গাছগুলোর মতো বাবা হারা সন্তানদের সব ঝড়বৃষ্টি-রোদ মোকাবিলা করে পৃথিবীতে টিকে থাকতে হয়।

বাবা শব্দটা দুই অক্ষরবিশিষ্ট; কিন্তু এর ভেতরে সীমাহীন গহিনে রয়েছে হৃদয়ের স্পন্দন। বাবার হাজারও ত্যাগ তিতিক্ষা এবং কত সহস্র যে ভালোবাসা লুকানো থাকে, তা প্রতিটি সন্তান ভালো করে জানে। বাবাকে নিয়ে যত কথা, যত স্মৃতি আছে। তা বলতে বা লিখতে গেলে আমার দ্বারা শেষ করা সম্ভব নয়। তবে দীর্ঘ আয়ু নিয়ে বাবা বেঁচে থাকা সবার ভাগ্যে থাকে না।

বাবার একটি স্মৃতি আপনাদের কাছে তুলে ধরতে চাই। ১৯৯৭ সালের ২০ জুন ঢাকা থেকে এক সপ্তাহের জন্য বাবা বাড়িতে আসেন। তিনি আসার সময় বাংলা অর্থসহ কোরআন শরিফ পড়তে আমাদের জন্য নিয়ে আসেন। বাবার হাত ধরে তার জীবনের শেষ নামাজ মসজিদে গিয়ে পড়ার সৌভাগ্য হয়েছে। তিনি মসজিদে আসা-যাওয়ার সময় মৌলিক দোয়াগুলো আমাকে শেখাতেন।

জীবনে সব ক্ষেত্রে ইসলামকে জীবন ব্যবস্থা মানার জন্য বলতেন। কর্মস্থলের ছুটি কাটানো সাত দিনশেষ, পর দিন নোয়াখালী থেকে ভোরের গাড়িতে গিয়ে তিনি ঢাকায় অফিস করবেন। হঠাৎ সন্ধ্যার সময় বাবার (হৃদক্রিয়া বন্ধ) হার্টস্টোক হলে ২ ঘণ্টার ব্যবধানে তিনি আল্লাহর ডাকে চলে গেলেন। হায়াতের কি নির্মম বাস্তবতা ঢাকা আর যাওয়া হলো না। বাবাকে কবরের যাত্রী হতে হয়েছে।

আমার বাবা ১৯৯৭ সালের ২৭ জুন রাত ৯টার সময় পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়েছেন। দেখতে দেখতে ২৬ বছর পার হয়ে গেল। কিন্তু আজও একটি মূহুর্তের জন্য বাবাকে ভুলতে পারিনি, মনে পড়ে অবিরত। বাবার স্মৃতিগুলোকে বুকে ধারণ করে বেঁচে আছি। জীবনের সব ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন অনুপ্রেরণাদায়ক।

আমার বাবা এমনই একজন যাকে ভালোবাসায়, স্মৃতিতে, স্মরণে, আদর্শে ধারণ করেই পথ চলছি, চলব তার গর্বিত সন্তান হয়ে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *