টিভি-ইউটিউব দেখে ড্রাগন চাষে প্রবাসীর সফলতা
বরগুনার আমতলী উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল চাওড়া ইউনিয়নের কাউনিয়া গ্রামে ড্রাগন চাষে সফলতা পেয়েছেন এক প্রবাসী। টিভি ও ইউটিউব দেখেই তিনি ড্রাগন চাষে সফলতা পেয়েছেন। প্রবাসী উদ্যোক্তার নাম মো. ইলিয়াস মাদবর।
সরজমিনে জানা যায়, আধুনিক কৃষির উপর ভিত্তি করে নির্মিত বিভিন্ন ভিডিয়ো দেখে আত্মকর্মসংস্থান ও স্বাবলম্বী হওয়ার অনুপ্রেরণা পায় মো. ইলিয়াস মাদবর। তিনি দীর্ঘ ৫ বছর কাতারে প্রবাস জীবন কাটিয়েছেন। পরবর্তীকালে দেশে ফিরে তিনি আধুনিক কৃষিতে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করেন।
প্রায় ২ একর ৫০ শতাংশ জমিতে তিনি এক হাজার সিমেন্টের খুঁটির উপর বিশেষ পদ্ধতিতে ড্রামের মধ্যে নানা প্রজাতির ড্রাগন কাটিং রোপণ করেন। ড্রাগনের কাটিং থেকে প্রায় ১৮ মাসের মধ্যে ফল পেতে শুরু করেন। টিভি ও ইউটিউব দেখেই তিনি ড্রাগন চাষে উদ্বুদ্ধ হন। ড্রাগন চাষের প্রাথমিক পর্যায়ে পরিচর্যা জনিত সমস্যা পোহাতে হয়। কিন্তু পরবর্তীকালে তিনি একজন সফল কৃষক হয়ে ওঠেন।
পাশাপাশি তিনি সফল কৃষক হিসাবে মাল্টা, থাই পেয়ারা, উন্নত জাতের লেবু, আম ও সবেদা ফলের চারা রোপণ করেন। এতে তিনি সফলতা পেয়েছেন। এখন গোটা বাগান জুড়ে মন জুড়ানো ড্রাগনের ফুল আর নানান ফল। সাথে সাথে আনন্দে মন দোলে সফল উদ্যোক্তা নাম মো. ইলিয়াস মাদবরের।
তিনি বলেছেন, আত্মকর্মসংস্থান গড়ে তুলতেই আমার প্রচেষ্টা। নিজেকে একজন সফল উদ্যোক্তা হিসাবে গড়ে তুলতে চেয়েছি। দীর্ঘ ৫ বছর পরে ২০১৮ সালের দিকে কাতার থেকে দেশে ফিরে আসি। আধুনিক কৃষিতে মনোনিবেশ করি। আজ আমি সফল কৃষক এবং উদ্যোক্তা।
ড্রাগন চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে তিনি বলেন, ফুল ফোটার ৩০ দিন পরে ড্রাগন ফল তোলার উপযোগী সময়। ড্রাগন চাষে খামারে উৎপাদিত কেঁচো সার ব্যবহার করা জরুরি। তবে ড্রাগন চাষে তেমন কীটনাশকের প্রয়োজন হয় না। ছত্রাক নাশক স্প্রে করলেই ফলকে শতভাগ নিরাপদ রাখা সম্ভব।
তিনি আরও বলেন, সতর্কতার বিষয় হচ্ছে ড্রাগন ফল গাছে রেখে পাকা অবস্থায় হারভেস্ট করতে হয়। এতে ফল মিষ্টি হয় এবং ক্রেতার ক্রয় করার আগ্রহ দেখা যায়। বাজারে প্রতি কেজি ড্রাগন ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা বিক্রি করা যায়।
আমতলী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সিএম রেজাউল করিম বলেন, আধুনিক কৃষিতে উদ্বুদ্ধ করতে কৃষকদের সকল প্রকার টেকনিক্যাল সহযোগিতা করা হবে। ড্রাগনের বহু জাত রয়েছে। এর মধ্যে সাদা ও লাল ড্রাগন দেখতে যেমন সুন্দর তেমন খেতেও সুস্বাদু। তাছাড়া একটি ড্রাগন গাছ থেকে ৪০ কেজি ফল আহরণ করা সম্ভব এবং প্রায় ২০ বছর যাবত এক একটি গাছ ফল দিয়ে থাকে।
তিনি আরও বলেন, শীতকালে ফল উৎপাদন ব্যাহত হতে পারে। তাই কৃষকের প্রচণ্ড শীতে লাইটিং ব্যবস্থা রাখা প্রয়োজন। অনাবাদী নিচু জমিতে ড্রাগন আবাদ করা যায়।
এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. এম এ কাদের মিয়া বলেন, প্রবাসী মো. ইলিয়াস মাদবরের মতো তরুণ বেকার যুবকেরা আধুনিক কৃষিতে উদ্বুদ্ধ হয়ে উদ্যোগ নিলে উপজেলা পরিষদ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার চেষ্টা করবে।