Home কৃষি ও প্রকৃতি মালচিং পদ্ধতিতে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষে কৃষকের মুখে হাসি
জুন ২০, ২০২৩

মালচিং পদ্ধতিতে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষে কৃষকের মুখে হাসি

কুড়িগ্রামে এই প্রথম বিষমুক্ত মালচিং পদ্ধতিতে বছরে এক খরচে তিনবার তরমুজ চাষ করে ব্যাপক সাফল্য পেয়ে খুশি চাষিরা। প্রথম বছরে লাভের একাংশ খরচ হলেও পরবর্তীকালে কম খরচে অধিক মুনাফা পাওয়ায় তরমুজ চাষে আগ্রহ বেড়েছে অন্যান্য চাষিদের মধ্যেও।

কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন- বাণিজ্যিকভাবে তরমুজ চাষ করা গেলে জেলার চাহিদা মিটিয়ে বাইরের জেলাতেও রফতানি করা যাবে তরমুজ। জানা গেছে, কুড়িগ্রাম জেলায় এই প্রথম গ্রীষ্মকালীন ও পরিবেশ বান্ধব বেবী তরমুজ পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করে সাফল্য পেয়েছে কৃষকরা।

পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) আর্থিক সহায়তায় আরডিআরএস বাংলাদেশ সমন্বিত কৃষি ইউনিট (কৃষিখাত) কর্মসূচির আওতায় জেলার রাজারহাট উপজেলার ছিনাই ইউনিয়নে তিনজন কৃষককে এক বিঘা জমিতে মালচিং পদ্ধতিতে তরমুজ চাষে সহায়তা করেছে। এক বিঘা জমিতে খরচ পরেছে প্রায় ৭৫ হাজার টাকা। আড়াই লাখ টাকায় তরমুজ বিক্রি করে তাদের লাভ হয়েছে প্রায় এক লাখ ৭৫ হাজার টাকা।

রাজারহাট উপজেলার ছিনাই ইউনিয়নের তালুককালোয়া কৈয়া গ্রামের মৃত. রাজকুমার চন্দ্র সরকারের ছেলে কৃষক পবনচন্দ্র সরকার (৪৫) জানান, দুই মাস পরপর লাগানো যায় এই জাতের তরমুজ। শীতের সময়টা বাদ দিয়ে বছরে তিনবার এর ফলন হয়। মাচা করেই এই জাতের তরমুজ চাষ করতে হয়। এক একটার ওজন হয় ৩ থেকে ৬ কেজি। রঙ লাল টসটসে এবং সুস্বাদু হওয়ায় এর ব্যাপক চাহিদা ও চাষের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

ছিনাই ইউনিয়নের পাঠানপাড়া গ্রামের কৃষক রওশন আলী বলেন, আমার ১২ শতক জমিতে ২৮ হাজার পাঁচশ টাকা খরচ হয়েছে। এর মধ্যে মালচিংয়ে আড়াই হাজার টাকা, বাঁশ, কটসুতা ও নেটে ১২ হাজার টাকা, সেচ ও কীটনাশকে তিন হাজার টাকা, জৈব সার ও রাসায়নিক সারে তিন হাজার টাকা, কীটনাশকে তিন হাজার টাকা ও ১০টি লেবার খরচে পাঁচ হাজার টাকাসহ মোট ২৮ হাজার ছয়শ টাকা খরচ হয়েছে।

আমের সিজন হওয়ায় দাম কিছুটা পড়তি হলেও খরচ বাদে আমি ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা লাভ করতে পারবো।

আরডিআরএস বাংলাদেশ’র রাজারহাট উপজেলার কৃষিবিদ সোহেল মাহমুদ জানান, পরিবেশ বান্ধব, বিষমুক্ত ও সাশ্রয়ী খরচে মালচিং পদ্ধতিতে তিনজন কৃষককে এই সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। তারা এই প্রথম তরমুজ চাষ করেছেন। ফলন পেয়ে তারা ভীষণ খুশি। চাষাবাদ পদ্ধতি রপ্ত করায় ভবিষ্যতে এই এলাকার অন্যান্য কৃষকরাও এতে সম্পৃক্ত হতে পারবেন। এতে জেলার ফলের চাহিদা মিটবে।

এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ পরিচালক কৃষিবিদ বিপ্লব কুমার মোহন্ত বলেন, এই প্রথম জেলাতে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ মালচিং পদ্ধতিতে চাষ করা হয়েছে। আমি মাঠ পরিদর্শন করেছি। ফলনও খুব ভালো হয়েছে। চাষিরা এটিকে বাণিজ্যিকভাবে চাষ করতে পারলে জেলায় ফলের চাহিদা মিটিয়ে অন্যান্য জেলাতেও বিক্রি করে আয় বৃদ্ধি করার সুযোগ সৃষ্টি হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *