অনাবাদি জমিতে ভুট্টা চাষে কৃষকদের ভাগ্য বদল
বছরের প্রায় অধিকাংশ সময় অনাবাদি পড়ে থাকে ফসলি জমি। কৃষি অফিসের পরামর্শে অনাবাদি জমিতে ভুট্টা চাষ করে সফলতা পাওয়ায় অনেকেই হয়েছেন সাবলম্বী। কম খরচে অধিক লাভবান হওয়ায় ভুট্টা চাষে ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখছেন নবীগঞ্জের কৃষকেরা।
কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়- হবিগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় চাষ হয়েছে ভুট্টা। গত কয়েক বছর ধরে অনাবাদি ক্ষেতে ভুট্টা চাষে কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে কয়েকগুণ । এ বছর হবিগঞ্জ জেলায় আবাদ হয়েছে ৬৫২ হেক্টর। এরমধ্যে নবীগঞ্জ উপজেলায় ১৩০ হেক্টর জমিতে ভুট্টার বাম্পার ফলন হয়েছে। ভুট্টা চাষে প্রতি বিঘা জমিতে খরচ হয় ১০-১২ বাজার টাকা। প্রতি বিঘা জমিতে ভুট্টা আবাদ হয় ৩০-৩৫ মণ। বাজারে প্রতি মণ ভুট্টা বিক্রি হচ্ছে ১২শ টাকা দরে। এছাড়া ভুট্টার গাছ জ্বালানি ও গবাদি পশুর খাদ্য সাইলেজ হিসেবেও বিক্রি করা যায়। কম খরচে অধিক লাভবান হওয়ায় অনাবাদি জমিতে ভুট্টা চাষে আগ্রহ বেড়েছে হবিগঞ্জের কৃষকদের।
নবীগঞ্জ উপজেলার দেবপাড়া ইউনিয়নের বৈঠাখাল গ্রামের কৃষক লোকমান খান বলেন- প্রথমবারের মতো ৫২ বিঘা জমিতে ভুট্টা ও সাইলেজ চাষ করেছি, স্বল্প খরচে বেশি লাভজনক হওয়া ভুট্টা ও সাইলেজ চাষের প্রতি আমার আগ্রহ বেড়েছে। সরকারি ভাবে সব-ধরণের সহায়তা পেলে আগামী মৌসুমে আমি বড় পরিসরে ভুট্টা চাষ করতে চাই।
নবীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ.কে.এম মাকসুদুল আলম বলেন- অনাবাদী জমিতে ভুট্টা চাষ করার জন্য আমরা কৃষকদের বিভিন্ন সময় পরামর্শ দিয়ে আসছি। খরচ ও কষ্ট কম হওয়ায় ভুট্টা চাষ দিন-দিন বাড়ছে। তিনি বলেন, বিদেশ থেকে ভুট্টা আমদানি করার ফলে দেশের অর্থ বাহিরে চলে যাচ্ছে, কৃষকরা ভুট্টা উৎপাদন বৃদ্ধি করলে ভুট্টা মানুষের খাদ্যের পাশাপাশি ভুট্টার গাছ জ্বালানি ও গবাদি পশুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহার যাবে। ফলে আমদানি ব্যয় কমবে এবং কৃষকরা নিজেরাও সাবলম্বী হবেন।
এ প্রসঙ্গে সিলেট অঞ্চলের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ কাজী মজিবুর রহমান বলেন- অনাবাদি জমিতে ভুট্টা চাষে উদ্ভুদ্ধ করতে কৃষক, জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে উঠান বৈঠক থেকে শুরু করে মাঠ পর্যায়ে নিয়মিত মতবিনিময় সভা করার ফলে ভুট্টার আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ বছর সিলেট বিভাগে ১৯শ ৪৭ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ করেছেন কৃষকরা । বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষকরা অল্প পুঁজিতে লাভবান হচ্ছেন।