Home অপরাধ বীর মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি গ্রেফতার
জুন ১৪, ২০২৩

বীর মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি গ্রেফতার

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের কোন্ডা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আতিকউল্লাহ চৌধুরীকে পুড়িয়ে হত্যার মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি তাজুল ইসলাম তানুকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব ১০। রোববার রাজধানীর বংশাল এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। রোববার বিকালে কেরানীগঞ্জে অবস্থিত র‌্যাব ১০-এর প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র‌্যাব ১০-এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন।

জানা যায়, ২০১৩ সালের ১০ ডিসেম্বর আতিকউল্লাহ চৌধুরী বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। রাতে বাসায় ফিরে না আসায় ১১ ডিসেম্বর তার ছেলে ফারুক চৌধুরী (বর্তমান কোন্ডা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান) দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। ওই দিনই কোন্ডা ১০ শয্যা হাসপাতালের পেছন থেকে আতিকউল্লাহ চৌধুরীর পোড়া লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ১২ ডিসেম্বর ফারুক চৌধুরী অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন।

মামলার তদন্ত শেষে পুলিশ আটজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। অভিযোগের ভিত্তিতে সাক্ষীদের সাক্ষ্য প্রমাণে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত ২০২০ সালের ২ ডিসেম্বর তাজুল ইসলাম, গুলজার, জাহাঙ্গীর ওরফে জাহাঙ্গীর খা, আহসানুল কবির ইমন, রফিকুল ইসলাম আমিন ওরফে টুন্ডা আমিন, শিহাব আহমেদ শিবু ও মো. আসিফকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেন। দীর্ঘদিন ধরে পলাতক ছিল তাজুল ইসলাম তানু। অবশেষে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব তাকে গ্রেফতার করেছে।

র‌্যাব ১০ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি ফরিদ উদ্দিন বলেন, কোন্ডা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি পদ ও চেয়ারম্যান পদ নিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা আতিকউল্লাহ চৌধুরী ও গুলজারের মধ্যে বিরোধ চলছিল। দুটি পদই আতিকউল্লাহ চৌধুরী পেয়ে যাওয়ায় তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন গুলজার। এজন্য তিনি তাজুল ইসলাম তানুর শরণাপন্ন হয়।

তানুর পরিকল্পনা অনুযায়ী আতিকউল্লাহ চৌধুরীর গতিবিধি লক্ষ্য রাখার জন্য গুলজার সম্পা নামে এক নারীকে নিয়োগ করেন। ওই নারী কৌশলে আতিকউল্লাহ চৌধুরীর সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করে এবং ২০১৩ সালের ১১ ডিসেম্বর রাতে মোবাইল ফোনে তার সঙ্গে দেখা করার জন্য আতিকউল্লাহ চৌধুরীকে কোন্ডা ১০ শয্যা হাসপাতালের সামনে আসতে বলেন। তার কথা মতো আতিকউল্লাহ চৌধুরী রিকশাযোগে হাসপাতালের গেটে এসে রিকশা ছেড়ে দেন। এ সময় পরিকল্পনা অনুযায়ী গুলজার ও তানু কৌশলে আতিকউল্লাহ চৌধুরীকে হাসপাতালের দক্ষিণ সীমানা বরাবর রাস্তায় নিয়ে ভাড়াটে খুনি জাহাঙ্গীর ওরফে জাহাঙ্গীর খা, আহসানুল কবির ইমন, রফিকুল ইসলাম আমিন ওরফে টুন্ডা আমিন, শিহাব আহমেদ শিবু ও আসিফের হাতে তুলে দেন।

ভাড়াটে খুনিরা আতিকউল্লাহ চৌধুরীকে মুখ চেপে ধরে কোলে করে হাসপাতালের পশ্চিম পাশের সীমানা ঘেঁষে নিচু জমিতে নিয়ে ভিকটিমের পরিহিত পাঞ্জাবি ছিঁড়ে মুখ বেঁধে ফেলে। এ সময় অন্য আসামিদের সহযোগিতায় তানু মুখ চেপে ধরে গলাটিপে আতিকউল্লাহ চৌধুরীকে হত্যা করে। পরবর্তীতে মৃতদেহের পরিচয় গোপন করার জন্য আসামিদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের পেট্রল ছিটিয়ে মৃতদেহটি পুড়িয়ে পালিয়ে যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *