Home প্রচ্ছদ ফের রিজার্ভ নামল
মে ২৫, ২০২৩

ফের রিজার্ভ নামল

দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আবার সামান্য কমে গত সাত বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে নামল। এবার নিয়ে চলতি মাসেই দুই দফা রিজার্ভ গত বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে নামল। এর আগে ৮ মে প্রথম সাত বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে নামে। এর আগে ২০২১৫-১৬ অর্থবছরে রিজার্ভ ছিল ৩ হাজার ৩৫ কোটি ডলার।

বুধবার রিজার্ভ আবার কমে ২৯ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমে যায়। ওইদিন রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৯৯৬ কোটি ৮৮ লাখ ৩০ হাজার ডলার। অর্থাৎ ৩০ বিলিয়ন ডলারের চেয়ে ৩ কোটি ১২ লাখ ডলার কম।

এর আগে ৮ মে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) দেনা পরিশোধের পর রিজার্ভ কমে ২৯ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমে গিয়েছিল। এর দুই দিন পর অর্থাৎ ১০ মে বিশ্বব্যাংকের বাজেট সহায়তা বাবদ ৫০ কোটি ডলার ছাড় হওয়ার পর রিজার্ভে যোগ হলে আবার বেড়ে ৩০ বিলিয়ন ডলারে ওঠে। দুই সপ্তাহের মধ্যে রিজার্ভ আবার ২৯ বিলিয়ন ডলারে নেমে গেল।

রপ্তানি ও রেমিট্যান্স আয় থেকে রিজার্ভে ডলার জমা কম হওয়া এবং এলসির দায় মেটাতে ডলার বিক্রি বাড়ার কারণে এবার কমেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, রিজার্ভ ২৯ বিলিয়ন ডলারের সামান্য নিচে নেমেছে। দু-একদিনের মধ্যেই এটি আবার ৩০ বিলিয়ন ডলারের ঘরে ওঠে যাবে। কেননা আসন্ন কুরবানির ঈদ উপলক্ষ্যে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়বে বলে আশা করা যায়।

সূত্র জানায়, ৩০ এপ্রিল দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ৩ হাজার ৯৬ কোটি ডলার। এ হিসাবে ২৪ দিনে রিজার্ভ কমেছে প্রায় ১০০ কোটি ডলার। গত বছরের একই সময়ে রিজার্ভ ছিল ৪ হাজার ২২৯ কোটি ডলার। এক বছরের ব্যবধানে রিজার্ভ কমেছে ১ হাজার ২৩২ কোটি ডলার।

৮ মে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) দেনা বাবদ ১১৮ কোটি ডলার পরিশোধের পর রিজার্ভ কমে ২ হাজার ৯৭০ কোটি ডলারে নেমে যায়। এর দুই দিন পর ১০ মে বিশ্বব্যাংক বাজেট সহায়তা বাবদ ৫০ কোটি ৭০ লাখ ডলার ছাড় করলে রিজার্ভ আবার বেড়ে ৩ হাজার ৯৬ কোটি ডলারে ওঠে। এরপর থেকে রিজার্ভ কমতে থাকে, যা কমতে কমতে বুধবার ২ হাজার ৯৯৭ কোটি ডলারে নেমে যায়।

নিট হিসাবে রিজার্ভ এখন ২৫ বিলিয়ন ডলারের নিচে রয়েছে। কেননা গ্রস রিজার্ভ থেকে বিভিন্ন তহবিলে বিনিয়োগ করা প্রায় ৫০০ কোটি ডলার এখন বাদ দিতে হবে। তহবিলে বরাদ্দ অর্থ আরও ১০০ কোটি ডলার কমিয়ে ৪০০ কোটি ডলার বাদ দিতে হাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এবার নিয়ে চলতি মাসেই দুই দফা রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নামল। অর্থাৎ সাত বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে। আজ থেকে সাত বছর আগে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে রিজার্ভ ছিল ৩ হাজার ৩৫ কোটি ডলার।

রিজার্ভ কমার কারণ হিসাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র জানায়, আমদানি ব্যয় মেটাতে ব্যাংকগুলোয় রিজার্ভ থেকে ডলারের জোগান বাড়াত হয়েছে। এর বিপরীতে রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স থেকে ডলার জমা কমে গেছে। এসব কারণে রিজার্ভ কমছে।

এদিকে রিজার্ভ ধরে রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আমদানিতে আরও কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ, বিদেশ ভ্রমণ, চিকিৎসা, শিক্ষা, সভা সেমিনারের মতো কম গুরুত্বপূর্ণ খাতে বৈদেশিক মুদ্রা ছাড়ে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে।

একই সঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রার আয় বাড়াতে রপ্তানির নতুন বাজার অনুসন্ধান, নতুন বাজারে রপ্তানি বাড়ানো, অপ্রত্যাবাসিত রপ্তানি আয় দেশে ফেরত আনা, রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ানোর পদক্ষেপ নিচ্ছে সংশ্লিস্ট সংস্থাগুলো। পাশাপাশি চড়া সুদের স্বল্পমেয়াদি বৈদেশিক ঋণ কমিয়ে কম সুদের দীর্ঘমেয়াদি ঋণ বেশি নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *