অনলাইন ডেস্ক,
রংপুর মহানগরীর একটি বেসরকারি ক্লিনিকে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হায়দার আলীর হাতে অপারেশন করা হয়। এ সময় তার মৃত্যুর অভিযোগ নিয়ে তুলকালাম কাণ্ড ঘটেছে। পরিবারের দাবি, ভুল অপারেশনের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার (২৩ মে) রাতের এ ঘটনার তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
রোগীর মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে সেখানে তৈরি হয় তুলকালাম কাণ্ড। এ ঘটনায় স্বজনরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ঘিরে রাখেন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। স্বজনরা এখনো লাশ নিয়ে যাননি।
তারা অভিযোগ দায়ের করেছেন। মৃত্যুর ঘটনাটি সুস্থ তদন্ত ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ঘটনায় সেখানে কান্নায় ভেঙে পড়েন নিহতের স্ত্রী ও স্বজনরা। তারা হাসপাতাল ঘিরে রাখে।
কৌশলে ক্লিনিক হাসপাতালের পরিচালক কামরুজ্জামান বাইরে থেকে তার রুমের তালা লাগিয়ে দেন। সেখানে গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত হলে কৌশলে পালানোর চেষ্টা করেন তিনি। গণমাধ্যমকর্মীরা তার কাছে জানতে চাইলে তিনি প্রথমে নিজের পরিচয় আড়াল করে বলেন, আমি হাসপাতালের কেউ না। এখানে দেখতে এসেছি। পরে তিনি নিজের পরিচয় স্বীকার করে বলেন, ঘটনা কী হয়েছে আমার জানা নেই। নিহত হায়দার আলীর বাবা ফজলুল হক জানান, এই হাসপাতালে ৪০ হাজার টাকায় আমার ছেলের অপারেশনের দরদাম হয়। আমরা টাকাও দিয়েছি। কিন্তু তারা অপারেশন করার পর আমার ছেলের অবস্থার অবনতি হয় এবং মারা যায়।
তিনি বলেন, আমার ছেলের বাঁ হাতের পেশির কাছে হাড্ডি ভেঙে যায়। তাহলে সেটা যদি কেটেও ফেলা হতো, তাতেও কি মানুষ মারা যায়। আসলে এটা অবৈধ ক্লিনিক এবং চিকিৎসকও কিছু জানে না। আমি চাই, আমার ছেলেকে যারা অপারেশনের নামে হত্যা করেছে, তাদের বিচার হোক। যাতে আর কোনো বাবা এভাবে তার উপার্জনক্ষম পুত্রকে না হারায়।
হায়দার আলীর শ্যালক জানান, যখন রক্ত দেওয়া হচ্ছিল, তখন স্কিলিং করা হচ্ছিল না। তখন আমি এর প্রতিবাদ করি। তারা বাধ্য হয়ে অন্য একটি জায়গায় গিয়ে রক্তের স্কিলিং করে। যে হাসপাতালে রক্ত স্কিলিং করার কোনো ব্যবস্থা নেই। তারা আবার স্পেশালাইজড শব্দ জুড়ে দিয়েছে। তারা ইচ্ছা করে ভুল অপারেশনে আমার দুলাভাইকে হত্যা করেছে। আমি এর বিচার চাই।
মৃত হায়দার আলী এক কন্যাসন্তানের জনক। তিনি শিক্ষানবিস আইনজীবী হিসেবে প্র্যাকটিস করার পাশাপাশি পিতার ব্যবসা দেখাশোনা করতেন।
রংপুর নগরীর মেট্রোপলিটন ধাপ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মাহমুদুল হাসান জানান, গত ২১ মে মোটরসাইকেল সড়ক দুর্ঘটনায় বাঁ হাত জখম হওয়া লালমনিরহাটের হাতীবান্ধার ফজলুল হকের পুত্র হায়দার আলী (২৭) নামের এক যুবক ভর্তি হন রংপুর মহানগরীর ধাপের ভিশন স্পেশালাইজড হাসপাতালে।
ওই দিন চিকিৎসক ডা. এম এম হক মাহফিল তার হাতের অপারেশন করলে রোগীর অবস্থার অবনতি হয়। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে রোগীকে রক্ত দেওয়ার পর তিনি মারা যান। তবে ঘটনা তদন্ত করা হচ্ছে। এ ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত হোক তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।