Home ধর্মীয় সংবাদ নবিজির জীবনী পাঠের প্রয়োজনীয়তা
মে ১৬, ২০২৩

নবিজির জীবনী পাঠের প্রয়োজনীয়তা

মানসিক বিকাশে নবিজির জীবনী

Advertisement

সিরাত বা নবিজির জীবনী অধ্যয়ন জীবন তরীকে নিয়ে যায় প্রশান্তির মহাসাগরে। মানসিক বিকাশে সবার উচিত সিরাত অধ্যয়নে মনোনিবেশ করা। সমাজের ক্রান্তিলগ্নে কীভাবে সঙ্ঘবদ্ধভাবে হিলফুল ফুজুলের মতো সংগঠনে সাংগঠনিক দক্ষতা প্রমাণ করতে হয় সিরাত পাঠের মধ্য দিয়েই তার বাস্তবিক শিক্ষা অর্জন করা যায়। সিরাত পাঠ মানুষে সুপ্ত প্রতিভার দীপ্তি সমাজে ছড়িয়ে দিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

অনুপ্রেরণা লাভে নবিজির জীবনী

বিষণ্নতার কালোছায়ায় জীবন ছেয়ে যাওয়ার বড় কারণ অনুপ্রেরণা না থাকা। অনুপ্রেরণা থাকলে হতাশা মানুষকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলে। অনুপ্রেরণা মানুষকে সফলতার স্বর্ণ শিখরে নিয়ে যায়। রাসূলুল্লাহর সমগ্র জীবনের প্রতিটি অধ্যায় থেকে অনুপ্রেরণা নেওয়ার সুবর্ণ সুযোগ রয়েছে। একজন সর্বহারা এতিমকে কীভাবে আল্লাহ পাক তাঁর বিশেষ কৃপায় সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষের মর্যাদায় আসীন করলেন-তার জাজ্বল্যমান প্রমাণ রয়েছে রাসূলের জীবনীর প্রতিটি পরতে।

নৈতিক শিক্ষালাভে নবিজির জীবনী

যে সমাজ যত বেশি নৈতিকতাশূন্য, সে সমাজে তত বেশি অপরাধপ্রবণতা দেখা যায়। নৈতিক শিক্ষার অভাবে মানুষ জড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন সামাজিক অপরাধে। এভাবে তারা নিজ জীবন থেকে শুরু করে সামাজিক জীবনকেও দুর্বিষহ করে তোলে। তাই জীবনকে শোভামণ্ডিত করতে সিরাত পাঠে গুরুত্ব অপরিসীম। পবিত্র গ্রন্থ কুরআনে প্রামাণিক ঘোষণা, ‘আল্লাহর রাসূলের মধ্যে তোমাদের জন্য রয়েছে উত্তম আদর্শ।’ (সূরা আল-আহজাব, ৩৩:২১)

অল্পে তুষ্টি ও নবিজির জীবনী

‘আরও চাই’ এমন কামনা মানবজীবনকে জটিল ও কঠিন করে তোলে। রাসূল (সা.) তাঁর জীবনজুড়ে উম্মতকে শিক্ষা দিয়েছেন যে, ইহজগতের প্রাপ্তিতে প্রকৃত সুখ নয়, বরং পরকালে জান্নাত প্রাপ্তিতেই প্রকৃত সুখ নিহিত। ছোটবেলায় বাবা-মা, দাদা হারিয়ে রাসূল তাঁর দরিদ্র চাচা আবু তালিবের অভিভাবকত্বে লালিত হন। চাচার সঙ্গে কষ্ট ভাগাভাগি করেছেন; কবু অভিযোগ করেননি। রাসূল (সা.) কে তৎকালীন কাফেররা কতই না লোভনীয় প্রস্তাব দিয়েছিলেন, কিন্তু রাসূল (সা.) তা ফিরিয়ে দিয়ে সত্যের ওপর অবিচল থাকেন। তিনি দোজাহানের সরদার ছিলেন। অথচ জীবনের শেষদিন নিজের মালিকানায় ছিল মাত্র সাত দিরহাম। তিনি তা-ও দান করে দিয়েছিলেন। অল্পেতুষ্টির শ্রেষ্ঠ আদর্শ রাসূলের জীবনী।

শুদ্ধ জীবনাচারে নবিজির জীবনী

সময়ে কত জীবনাচার আসে আর সময়েই তার বলুপ্তি ঘটে। এখন পর্যন্ত পৃথিবীর বুকে সর্বশ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানসম্মত জীবনাচার হিসাবে স্বীকৃত রাসূলের জীবনাচার। কারণ, তার শিক্ষক স্বয়ং আল্লাহ পাক। আল্লাহ পাক বলেন, ‘পরম দয়ালু (আল্লাহ)। এ কুরআন শিক্ষা দিয়েছেন (সূরা আর-রহমান, ৫৫:১-২)।’ ব্যক্তি জীবন থেকে শুরু করে জাতীয় জীবন সবখানেই রাসূল (সা.) রেখে গেছেন শুদ্ধজীবনের স্বাক্ষর। শুদ্ধ জীবনাচার দিয়ে একটি বর্বর সমাজকে পরিবর্তন করেন এক আদর্শ জাতিতে। ইসলাম শুধু একটি ধর্মই নয়, বরং হাজারও প্রতিকূলতার মধ্যেও কীভাবে সফল হতে হয়, জীবনের প্রতিটি স্টেশনে কীভাবে এগিয়ে যেতে হয়-রাসূল (সা.) তা হাতে-কলমে উম্মতকে শিখেয়ে গেছেন। রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘আমি শিক্ষক হিসাবে প্রেরিত হয়েছি।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ২২৯)।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *