টাঙ্গাইলে দুই সহোদরে উত্তপ্ত আ.লীগ
সাধারণ চোখে অস্বাভাবিক কিছু ধরা না পড়লেও কার্যত ভেতরে ভেতরে পালটে গেছে টাঙ্গাইলের রাজনৈতিক দৃশ্যপট। উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে এখানকার রাজনৈতিক পরিবেশ। এখানকার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে ভীতি ছড়ানো আলোচিত দুই সহোদর সংসদ-সদস্য তানভীর হাসান ছোট মনির ও টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি গোলাম কিবরিয়া বড় মনির।
৬ এপ্রিল বড় মনিরের বিরুদ্ধে কিশোরী ধর্ষণের মামলা হওয়ার পর থেকেই দ্রুত পালটাতে থাকে পরিস্থিতি। দোর্দণ্ডপ্রতাপশালী বড় মনির গ্রেফতার এড়াতে আত্মগোপনে গেলেও তার অনুসারীরা এই মামলাকে ‘রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র’ হিসাবে দেখছেন। সচেতন নারীসমাজের ব্যানারে বড় মনিরকে গ্রেফতারের দাবিতে মিছিল-সমাবেশ হয়েছে। নাগরিক সমাজের ব্যানারে মিছিল-সমাবেশ হয়েছে মামলা প্রত্যাহার দাবিতে। পালটাপালটি কর্মসূচিতে উত্তপ্ত হচ্ছে টাঙ্গাইলের রাজনীতি।
ক্ষমতাসীন দলের নির্যাতিত, নিপীড়িত, ত্যাগী নেতাকর্মীরা এই সুযোগে প্রকাশ্যে বড় মনির ও ছোট মনিরের অপকর্ম তুলে ধরছেন। তাদের দাবি, দুই সহোদরের সন্ত্রাস-চাঁদাবাজি ও কুৎসিত রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় দলের সর্বনাশ হয়ে গেছে। জাতীয় নির্বাচনের আগে ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারে যা দরকার, তাই করবেন তারা। কারণ, দলের দুর্দিনে সুসময়ের এই ভাগীদাররা বিদেশে ছিলেন। পরিস্থিতি প্রতিকূল হলে ফের বিদেশ চলে যাবেন। গত দুদিন টাঙ্গাইল সদর ও ছোট মনিরের নির্বাচনি এলাকা ভূঞাপুর-গোপালপুর সরেজমিনে রাজনীতি সচেতন মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এসব তথ্য।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, শুধু নারী কেলঙ্কারি নয়, আলোচিত দুই সহোদর খুন, ছিনতাই ও মাদক ব্যবসায় সরাসরি মদদ দেন। আছে দখল-চাঁদাবাজির এন্তার অভিযোগ। ছোট মনির সংসদ-সদস্য হওয়ার পর থেকেই নিজের দল ভারী করতে বেছে নেন মামলা-হামলার পথ। দলের যেসব নেতাকর্মী তাদের অনুসারী হতে অস্বীকার করেছেন, তাদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে হয়রানি করা হয়েছে। জেলজুলুম এখন ওইসব ‘ত্যাগী’ নেতাদের নিত্যসঙ্গী। অনেকেই এলাকা ছেড়ে ঢাকায় স্থায়ী নিবাস গড়েছেন। মামলায় হাজিরা দিতে টাঙ্গাইল এলেও থাকেন আতঙ্কে। দুই সহোদরের এ ধরনের মামলা-হামলার কূটচালে দলের কয়েকশ নেতাকর্মীর পারিবারিক জীবন তছনছ হয়ে গেছে।